স্লোভেনিয়ায় ঈদ উদযাপন
সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, তুরস্ক ও ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে মিলিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন স্লোভেনিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়।
ঈদকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজধানী লুবলিয়ানাতে অবস্থিত একমাত্র সরকারি মসজিদ দ্য ইসলামিক রিলিজিও-কালচারাল সেন্টারে স্বল্প পরিসরে ঈদ জামায়াতের আয়োজন করা হয়। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে খুব কম মানুষকে ঈদ জামায়াতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ এখনও স্লোভেনিয়া থেকে পুরোপুরিভাবে কেটে যায়নি। তাই বাড়তি সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে ইসলামিক কমিউনিটি অব স্লোভেনিয়ার পক্ষ থেকে সবাইকে বাসায় নিজ পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাশাপাশি মুসল্লিদেরকে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দোয়ার আহবান জানায় ইসলামিক কমিউনিটি অব স্লোভেনিয়া।
২০১৮ সালের জনগণনা অনুযায়ী ৭,৮২৭ বর্গমাইলের দেশ স্লোভেনিয়ার মোট জনসংখ্যা ২১ লাখের কাছকাছি। যদিও সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটির শতকরা ৭৩ দশমিক ৪ ভাগ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী তবে দেশটিতে বর্তমানে ক্যাথলিক চার্চের প্রভাব তেমন একটা চোখে পড়ে না। ক্যাথলিক খ্রিস্টানিটির পর দেশটিতে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের ধর্ম ইসলাম। দেশটির মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩ দশমিক ৭ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন যাদের বড় অংশ বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, মেসিডোনিয়া ও কসোভো থেকে যুগোস্লাভিয়া শাসনামলে দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে মধ্য ইউরোপের এ দেশে ৩৫ থেকে ৪০ জন প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। এদের মধ্যে অল্প কয়েকজন শিক্ষার্থী, বাকি সবাই বিভিন্ন পেশাভিত্তিক কাজের সাথে জড়িত। ইউরোপের অন্যান্য দেশ যেমন, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রিস, জার্মানি কিংবা অস্ট্রিয়ার মতো স্লোভেনিয়াতে এখনও সেভাবে সুসংগঠিত বাংলাদেশি কমিউনিটি গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া ঈদ উপলক্ষে স্লোভেনিয়াতে সরকারিভাবে কোনো ছুটিও নেই, তাই এখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে ঈদ আনন্দ সেভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় না।
স্লোভেনিয়াতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলী তৌসিফ রহমান জানিয়েছেন, ‘প্রায় অর্ধ শতাব্দীর প্রচেষ্টার পর গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্লোভেনিয়ার ইতিহাসে সরকারিভাবে কোনো মসজিদের উদ্বোধন হয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যবশত করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা এখনও সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করার সুযোগ পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের নামাজ ছাড়া ঈদ আনন্দ সেভাবে পূর্ণতা পায় না। তাই দোয়া করি দ্রুত পৃথিবী থেকে যাতে করোনার এ মহামারি তান্ডবের অবসান ঘটে এবং চারপাশের সবকিছু আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে। পাশাপাশি আমি সবাইকে তার অবস্থান থেকে একটি আহবান জানাতে চাই যাতে আমরা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি।’
রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া।
Comments