সুরকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেলেন সাংবাদিক তানভীর তারেক

তানভীর তারেক। ছবি: সংগৃহীত

তানভীর তারেক বিনোদন সাংবাদিকতায় পরিচিতি নাম। পাশাপাশি লেখক হিসেবেও পরিচিত। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন লেখা আর সুরের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে তার নাম ঘোষণা হয়েছে। পুরস্কার পাওয়ার পরের প্রতিক্রিয়া জানালেন দ্য ডেইলি স্টারকে।

তানভীর তারেক বলেন, ‘এতদিন সবাই বলতো আর আমি ছাপতাম। এটা আসলে ভাষায় প্রকাশযোগ্য না। আমার সঙ্গে একটা পুরস্কার নিয়ে অনেক বছর আগের খারাপ ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। লজ্জায় আর অপমানে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে গিয়েছিলাম অনুষ্ঠান ছেড়ে। আমার খুব কাছের মানুষরা এমন করেছিল। কখনো হাল ছাড়িনি। কাজ করে গেছি। তাই জীবনের সেরা প্রাপ্তির এই পুরস্কার তালিকায় প্রাপক হিসেবে নিজের নাম দেখে কী এক আনন্দ অশ্রু এসেছে, বলে বোঝাতে পারব না। আমি বাবাকে হারিয়েছি ১৩ বছর আগে। তিনি আমার এই অর্জনের কথা শুনলে কতই না খুশি হতেন!’

সংগীতের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সংগীতের যাত্রা বিচিত্র। আমি মূলত এ শহরে এসেছিলাম গান লিখতে, গাইতে ও সুর করতে। ক্যাসেটের লেবেলে কোম্পানি অফিসের ঠিকানা থাকতো। সেই ঠিকানায় শিল্পীর নামে লিরিক পাঠাতাম। ভাবতাম একদিন এভাবে পাঠাতে পাঠাতে ক্যাসেটে নিজের নামটা দেখব। কিন্তু বিষয়গুলো যে এতো সহজ না, তা পরে জেনেছি। বাচ্চু ভাই (আইয়ুব বাচ্চু) আমাকে একটি চিরকুট লিখে সাউন্ডটেকে পাঠান। তখন আমি মেসে থাকি। সাউন্ডটেকের সুলতান মাহমুদ বাবুল ভাই আমাকে এক সপ্তাহ পর যেতে বলে একটা খামে করে দুই লাখ টাকা দিয়ে বলেন, ‘এই নেন। নিজের যা সুর, কথা আছে তা দিয়া ১২টা গান বানাইয়া লইয়া আসেন।’ সেই থেকে আমার গীতিকার, সুরকার বা অ্যালবাম অ্যারেঞ্জার হিসেবে যাত্রা শুরু। এসআই টুটুলকে একক সুরকার হিসেবে সুযোগ দেই। আমি কৃতজ্ঞ টিংকু আজিজুর রহমানের কাছে। কারণ, তার স্টুডিওতে তার সহকারী হয়ে টানা চার বছর কাজ করেছি, স্টুডিও কম্পোজিশন শিখেছি। সেই থেকে নিজের সুর নিজে বাঁধি। আমি কৃতজ্ঞ লাকী আখন্দ স্যারের কাছে। তিনি আমাকে একটা পুরনো গিটার উপহার দিয়েছিলেন। ফ্রি গিটার শেখান দুইমাস। এ শহরের প্রতি আমার আজন্ম ঋণ।’

সিনেমার গান প্রসঙ্গে তানভীর বলেন, ‘গত প্রায় ২২ বছর ধরে সংগীতের নানান শাখা-উপশাখার শ্রমিক হিসেবে কাজ করছি। গত সাত বছরে গুনে গুনে ১৭টি গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছি। কবি, নির্মাতা মাসুদ পথিকের ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’ ছবির ‘জন্মভূমি’ গানটি করার সুযোগ পেয়ে ভীষণ কৃতজ্ঞ ছবির পুরো টিমের কাছে। গানটির দুটি ভার্সন। একটি নারী কণ্ঠে, একটি পুরুষ কণ্ঠে।’

‘নারী কণ্ঠের গানটি অসাধারণ গেয়েছেন কোনাল। সত্যিই আমি অভিভূত। জুরি বোর্ডের সম্মানিত সদস্যদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। একজন শিল্পীর জীবন পূর্ণ করে একটি জাতীয় পুরস্কার। আমার জন্য বাড়তি আনন্দের বিষয় হলো, দেশের গানে সুর করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছি।’

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

10h ago