অ্যাস্ট্রাজেনেকার সিস্টেমে প্রবেশের চেষ্টা উ. কোরিয়ান হ্যাকারদের
উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা সম্প্রতি করোনাভাইরাসের টিকা প্রস্তুতকারী ব্রিটিশ ওষুধ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার সিস্টেমে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। দুটি বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সূত্র জানায়, হ্যাকাররা নেটওয়ার্কিং সাইট লিংকডইন ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চাকরির অফার নিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এর মাধ্যমে তাদের কম্পিউটারে অ্যাক্সেস পাওয়ার চেষ্টা করে হ্যাকাররা।
আরেকটি সূত্র জানায়, হ্যাকাররা কোভিড-১৯ গবেষণায় কর্মরতদের একটি ‘বড় অংশের’ দিকে টার্গেট করেছে। তবে, তারা সফল হয়নি বলেও মনে করে সূত্র।
এই হ্যাকিংয়ের বিষয়ে জেনেভায় জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। পিয়ংইয়ংও এর আগে সাইবার আক্রমণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকাও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিশ্বের শীর্ষ তিন উদ্যোগের একটি হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড যৌথভাবে করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর ট্রায়াল চালায়। গত ২৩ নভেম্বর তাদের ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করে।
দুটি সূত্রই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ডিভাইস হ্যাকিংয়ের কৌশল দেখে মার্কিন কর্মকর্তারা ও সাইবার সিকিউরিটি গবেষকরা উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করছেন।
এর আগে, এমনভাবেই প্রতিরক্ষা সংস্থা ও গণমাধ্যমের ওপর সাইবার আক্রমণ হয়েছিল বলে এই হ্যাকিংয়ের বিষয়ে তিন তদন্তকারী জানিয়েছেন।
তবে, সম্প্রতি টার্গেট বদলে কোভিড সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সংস্থা, ভ্যাকসিন গবেষক ও ওষুধ প্রস্তুতকারীদের হ্যাকিং করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তারা।
ইরান, চীন ও রাশিয়ার হ্যাকাররা এ বছর শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতেও অ্যাক্সেসের চেষ্টা করেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছিল। তবে, তেহরান, বেইজিং ও মস্কো ওই অভিযোগ অস্বীকার করে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কর্মীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কয়েকটি অ্যাকাউন্টে রাশিয়ান ইমেইল অ্যাড্রেস ছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে, এটি তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার একটি প্রয়াস বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মাইক্রোসফট চলতি মাসে জানায়, উত্তর কোরিয়ার দুটি হ্যাকিং গ্রুপকে একাধিক দেশের করোনা ভ্যাকসিন সংশ্লিষ্টদের টার্গেট করতে দেখা গেছে। তবে, মাইক্রোসফট তাদের কারও নাম প্রকাশ করেনি।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার আইন প্রণেতারাও শুক্রবার জানিয়েছেন যে, তাদের গোয়েন্দা সংস্থা এরকম কয়েকটি প্রচেষ্টা সম্প্রতি ব্যর্থ করে দিয়েছে।
২০১৪ সালে সনি পিকচারের ইমেইল হ্যাক ও ফাঁস, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাইবার আক্রমণের পেছনে উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেন মার্কিন প্রসিকিউটররা।
তবে, পিয়ংইয়ং একে ওয়াশিংটনের ইমেজ ফিরিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
Comments