ম্যারাডোনার বিদায়ে শোবিজ তারকাদের শোক
ফুটবল জাদুকর ডিয়েগো ম্যারাডোনার বিদায়ে কাঁদছে বিশ্বের ফুটবুলপ্রেমীরা। শোকের ঢেউ এসে পড়েছে বাংলাদেশেও। দেশের শোবিজ তারকারাও শোকাহত ও মর্মাহত প্রিয় ফুটবল তারকার বিদায়ে।
শোবিজ তারকাদের অনেকেই ফেসবুকে ম্যারাডোনাকে নিয়ে বেদনাভরা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কয়েকজন তারকার একান্ত অনুভূতি এ লেখায় তুলে ধরা হলো।
মামুনুর রশীদ: ফুটবল মানেই তো ম্যারাডোনা আর পেলে। তবে, এদেশে ফুটবলকে গভীরভাবে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন ম্যারাডোনা। শত শত মাইল দূরে থাকা একজন খেলোয়াড় কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন এদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে— তার অন্যতম উদাহরণ ম্যারাডোনা।
এটা মূলত হয়েছিল ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ খেলার সময় থেকে। ওই বছর ম্যারাডোনার কারণেই তার দেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তখন এদেশে রঙিন টেলিভিশন এসে গেছে। এছাড়া মধ্যবিওরা সাদাকালো টেলিভিশন কেনার সক্ষমতা অর্জন করেছে। সব মিলিয়ে শহর বলি আর গ্রাম বলি টেলিভিশনে ম্যারাডোনার খেলা দেখে তাকে ভালোবেসে ফেলেছেন। যা আর কমেনি। তার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশ শুধু নয়, সারা বিশ্ববাসী তাকে কতটা ভালোবাসতেন। এই ভালোবাসা কমবে না, থেকেই যাবে।
আফজাল হোসেন: ম্যারাডোনা আসলেই ফুটবলের জাদুকর। একজন বিশ্বনন্দিত ফুটবলার তিনি। আমাদের দেশে তার কোটি কোটি ভক্ত রয়েছেন। এইরকম সারা বিশ্বে আছে তার ভক্ত। ফুটবলে কতটা জাদু দেখাতে পারলে এত বড় ভক্ত সংখ্যা হয় একজন খেলোয়াড়ের।
হঠাৎ করেই টেলিভিশনে তার চির বিদায়ের কথাটি শুনে খারাপ লেগেছে। বার বার ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলার সময়টির কথা চোখে ভাসছে। ওই বছরই বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক তিনি। যার ফলেই মূলত আমাদের দেশে তিনি এতটা জনপ্রিয়। তার এই জনপ্রিয়তা রয়ে যাবে বছরের পর বছর। পরপারে ভালো থাকুন তিনি।
সুবর্ণা মুস্তাফা: তাকে বিদায় বলব না। তার মত নামি খেলোয়াড় দেহগতভাবে না থাকলেও সব সময় থাকবেন তার খেলা দিয়ে। সব সময় থাকবেন। তাই বিদায় বলা হলো না। ফুটবলের ইতিহাসে তিনি একটি ইতিহাস। ফুটবলে তিনি স্বর্গ গড়েছেন এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তিনি সেরাদেরও সেরা।
জাহিদ হাসান: ম্যারাডোনাকে ফুটবুল জাদুকর বলা হয়। আমি বলব— আরও বেশি বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। এইরকম নামকরা খেলোয়াড় শতবছরে হয়ত একবার আসবে। একজন মানুষ খেলার জন্য এদেশে কত জনপ্রিয়। তার তুলনা তিনি নিজেই। তার চলে যাওয়ার কথাটি শুনে ১৯৮৬, ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ খেলার কথা খুব করে মনে পড়ছে। বিশেষ করে, ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক তিনি। ওই স্মৃতিটা খুব মনে পড়ছে। তার আত্মা শান্তিতে থাকুক এটাই চাওয়া। আমরা তাকে মনে রাখব ভালোবাসা দিয়ে।
ফেরদৌস: ফুটবল ভালোবাসেন না এইরকম মানুষ কমই পাওয়া যাবে। আর নানা দেশ সাপোর্ট করলেও ম্যারাডোনাকে পছন্দ করেন না— এইরকম ভক্তও কম পাওয়া যাবে। অন্য দেশ সাপোর্ট করলেও ম্যারাডোনার প্রতি ভালোবাসা, ম্যারাডোনার ছন্দময় খেলার সমর্থন করা মানুষ বিশ্বে কোটি কোটি।
আমাদের দেশে তার জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। এইরকম একজন খেলোয়াড়ের খেলার ভক্ত আমিও। তার চলে যাবার খবরে খুব খারাপ লেগেছে। যেখানে থাকুন শান্তিতে থাকুন ফুটবল জাদুকর।
রিয়াজ: ছেলেবেলায় ফুটবল খেলার স্মৃতি মনে করা মানেই ম্যারাডোনার নামটি মনে করা। আমরা ছেলেবেলায় যখন ফুটবল খেলতাম, তখন ম্যারাডোনার ক্রেজ তুঙ্গে। যেখানে ফুটবল সেখানেই ম্যারাডোনার নাম সে সময়ে।
হাজার হাজার মাইল দূরের দেশের একজন মানুষের জন্য কত ভালোবাসা আমাদের। বড় হয়ে টের পেয়েছি তারকার জন্য ভক্তদের ভালোবাসা এমনই।
তার চলে যাওয়ার খবরে কষ্ট পেয়েছি। নানা চ্যানেলে তার না থাকার খবরটি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি। মানুষ ম্যারাডোনার মৃত্যু হলো, কিন্তু খেলোয়াড় ম্যারাডোনার তো মৃত্যু নেই। তিনি বেঁচে থাকবেন কোটি কোটি ভক্তদের ভালোবাসা নিয়ে।
চঞ্চল চৌধুরী: আমাদের কৈশোর, স্কুল জীবনে, মিশে ছিল যে নামটি, তা হচ্ছে ম্যারাডোনা। খুব বেশি করে ফিরে যাচ্ছি অতীতে। ম্যারাডোনার ছবিওয়ালা খাতায় লিখতে লিখতে স্কুল জীবন পার করে দিয়েছি। তার বিদায়ে এখন কেমন লাগছে তা কাউকে বুঝানো যাবে না। গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়িতে, সাদাকালো টেলিভিশনে ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ খেলা দেখার স্মৃতি কোনোদিনও ভুলবার নয়। কত স্মৃতি মনে পড়ছে। প্রিয় খেলোয়াড়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি।
বিদ্যা সিনহা মীম: যে দেশই সমর্থন করি না কেন— ম্যারাডোনার প্রতি ভালোবাসা সব সময় ছিল, এখনো আছে। হঠাৎ করে তার মৃত্যুর খবর শুনে খারাপ লেগেছে। খেলা দিয়ে কতটা বিশ্ব নন্দিত হওয়া যায় তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ম্যারাডোনা। তার মতো খেলোয়াড়ের ভালোবাসার মানুষের অভাব কখনো হবে না। ফুটবলের জাদুকর হিসেবে তিনি চির অমর হয়ে থাকবেন।
Comments