ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের চিঠির অপেক্ষায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
নানা জটিলতায় আটকে থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট আবারও ট্রায়ালের আবেদন করে চিঠি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে।
গত ১৪ নভেম্বর দেওয়া চিঠিতে লেখা হয়েছে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল কমিটির সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে আমরা জিআর কোভিড-১৯ র্যাপিড অ্যান্টিবডি কিটের জন্য ইউএস এফডিএ’র আমব্রেলা গাইডলাইন নীতিমালা অনুসরণে সংবেদনশীলতা ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত করেছি, তা প্রমাণের জন্য এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি।
এবার বিএসএমএমইউ ও আইসিডিডিআরবি থেকে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ইউএস আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে কিট পরীক্ষার মতো সক্ষমতা বিএসএমএমইউ ও আইসিডিডিআরবি’র ছিল না। তবে গত কয়েকমাসে বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান দুটি সেই সক্ষমতায় পৌঁছেছে। এ তথ্য জানার পর বিএসএমএমইউ ও আইসিডিডিআরবিতে কিটের এক্সটারনাল ভ্যালিডেশন করাতে চেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
এ বিষয়ে অনুমোদন প্রাপ্তির জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে এ আবেদন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট উদ্ভাবন প্রকল্পের সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আইসিডিডিআরবিতে কিটের এক্সটারনাল ভ্যালিডেশনের জন্য ইউএস আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণে যতগুলো প্রক্রিয়া ও ধাপ সম্পন্নের প্রয়োজন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তার সবগুলোই সম্পন্ন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘এবার আমরা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছ থেকে সেই অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে এখনো কোনো অফিসিয়াল চিঠি পাইনি। তবে আশা করছি অতি দ্রুত তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে এবং আমাদের অনুমোদন দিয়ে চিঠি দেবে।’
‘বিএসএমএমইউ যে প্রক্রিয়ায় ট্রায়াল করেছে, আর অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট ট্রায়ালের ক্ষেত্রে যে ইউএস আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে, এতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আমাদের জন্য অনেক বেশি সহজ। আমরা চাই, যতো অল্প সময়ের মধ্যে হোক, তারা এটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেবে’, যোগ করেন তিনি।
ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার আরও বলেন, ‘আগে বিএসএমএমইউতে কিট পরীক্ষা করাতে আমাদের চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। এবারও ইউএস আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে কিট পরীক্ষার জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।’
করোনা মহামারি শুরুর কিছু দিন পরেই গত ১৮ মার্চ অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সরকারকে দ্রুত কিট পরীক্ষার দাবি জানায় তারা। দেরিতে হলেও গত ৩০ এপ্রিল বিএসএমএমইউতে সেই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমতি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। পরে বিএসএমএমইউতে কিট জমা দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
বিএসএমএমইউ পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা পাওয়া গিয়েছিল ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৬ শতাংশ। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছিল, ইউএস আমব্রেলা গাইডলাইনের আলোকে কিটের সর্বনিম্ন সংবেদনশীলতা ৯০ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এবার গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা হবে আইসিডিডিআর,বিতে
এফডিএ’র গাইডলাইন অনুযায়ী অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা খুব সহজে প্রমাণ হবে: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের অনুমোদন দেয়নি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর
বিএসএমএমইউর প্রতিবেদন বলছে গণস্বাস্থ্যের কিট কার্যকর
গণস্বাস্থ্যের কিট কার্যকর নয়: বিএসএমএমইউ, কিট কার্যকর- প্রতিবেদন পেয়ে প্রতিক্রিয়া: ড. বিজন
আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন
ড. বিজনের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত সম্ভব
Comments