‘আসুন মানসিকতা পরিবর্তন করি, নারীকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিই’
নারীর প্রতি সহিংসতা বাংলাদেশে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার! তবে সিলেটে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ আর নোয়াখালীতে গৃহবধূকে নির্যাতনের পর প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ। তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও।
নারীর জন্য নিরাপদ একটি বাংলাদেশ গড়তে মানসিকতা পরিবর্তনের পাশাপাশি সকলকে জেগে ওঠার আহ্বান তারা করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বুধবার বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার স্ট্যাটাস, ‘আপনার মেয়ে যখন আপনার কোলে বসে থাকে, তখন আপনার সেই অনুভূতি হয় না। যখন আপনার বোন আপনার পাশের রুমে থাকে, তখনও সেই অনুভূতি আসে না। আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যখন আপনি ঘুরতে বেরোন, তখন তার দিকে বাঁকাভাবে তাকালে আপনার খারাপ লাগে। কিন্তু অন্যকে দেখার ক্ষেত্রে কি আমার, আপনার অনুভূতি একই রকম আছে?
তা না হলে বুঝে নিতে হবে, সমস্যা অনেকের মগজেই। হয়তো পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে সবারটা প্রকাশ পায় না। আসুন মানসিকতা পরিবর্তন করি। নারীকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিই।
আর ধর্ষক কোনো পরিচয় বহন করে না। সে কুৎসিত, হয়তো চেহারায় নয়, মানসিকতায়।’
আগের দিন উইকেটরক্ষক ও দেশসেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ধর্ষণ কিংবা যে কোনো যৌন নির্যাতন কখনো সহ্য করা হবে না। সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। জেগে ওঠো বাংলাদেশ। ধর্ষণকে না বলো। না মানে না।’
ফেসবুকে জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের স্ট্যাটাস, ‘কিছু মানুষরূপী পশুদের কী দুর্ভাগ্য! নারীর পেটে জন্ম নিয়েও নারীকে সম্মান করতে শিখল না। মা-বোনেরা তোমরা সাবধানে থেকো। এই শহরে মানুষ নামের কিছু পশু আছে। কী লিখব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই।’
তারকা বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার লিখেছেন, ‘কোনো নারীকে যেন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে না হয়। নারীদের অনুভব করতে হবে যে, তারা একা নয়। নিপীড়নকারীদের কোনো ক্ষমা নেই।’
হ্যাশট্যাগ দিয়ে তিনি যোগ করেছেন, ‘স্টপ রেপ (ধর্ষণ বন্ধ হোক)।’
এর আগে তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করি এবং আমাদের নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি, যাতে তারা স্বপ্ন দেখতে পারে এবং নির্ভয়ে তাদের জীবনযাপন করতে পারে। মনে রাখবেন, আজকে আমরা যদি বর্বর এই আচরণ ও মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়াই, তবে একদিন আমাদের প্রিয়জনদের একজনই হতে পারে এই নির্মমতার ভুক্তভোগী।’
Comments