লেবাননে আহত ৭৮ বাংলাদেশির ১০ জন হাসপাতালে
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু ও ৭৮ জনের আহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৯ জন নৌবাহিনীর। তাদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই ঘটনায় নিহতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদি হাসান ও মাদারীপুরের মিজানু রহমান। দুই জনেই লেবাননে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
মেহেদির আত্মীয় সুজন মিয়া লেবানন থেকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মেহেদি কয়েক বছর আগে লেবাননে আসেন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিকান্দা ইউনিয়নের ভাদেশ্বরা গ্রামে তার বাড়ি।’
মেহেদির বাবা তাজুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি নিজেও বাহরাইনে ছিলেন। ছয় বছর আগে ছয় লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বেড় ছেলে মেহেদিকে লেবাননে পাঠান।
নিহত আরেকজন মিজানুর রহমান মাদারীপুরের কালকিনির মিয়াহারহাটের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। কালকিনির শিকারমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মৃধা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রাতেই আমরা সংবাদ পেয়েছি। সকালে পরিবারটির সঙ্গে কথা বলেছি। স্বজন হারানোর শোকে রয়েছে পরিবারটি।’
মিজানু্রের মামা বজলুর রহমান ডেইলি স্টারকে জানান, দুই বছর আগে মিজানুর লেবাননে যায়। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়। সংবাদ পাওয়ার পর থেকে পুরো পরিবারে আহাজারি চলেছে।
লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুন দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ৭৮ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, শান্তি মিশনের একটি জাহাজে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৯ জন সদস্যসহ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং আরও তিন জন গুরুতর আহত।
‘তাদের লেবাননের মাউন্ট লেবানন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বিস্ফোরণে শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজারের বেশি মানুষ। লেবাননে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন।
আন্তঃবাহিনী যোগাযোগ জনসংযোগ পরিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে বৈরুত বন্দরের কাছে হওয়া বিস্ফোরণে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অন্তত ২১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৈরুতে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। আহত নৌবাহিনীর সদস্যদের বৈরুতের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
শরিফুল হাসান, ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার
Comments