গ্রেপ্তার এড়াতে পানিতে ঝাঁপ, অসু্স্থ অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু

গ্রেপ্তার এড়াতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পানিতে লাফিয়ে পড়ার পর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে এক আসামির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত ৩টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মারা যান জমি সংক্রান্ত মামলার আসামি চৌমুহনী আলিফ প্রেসের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ উল্যাহ (৫২)।

নিহত ব্যবসায়ীর পরিবার ও বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আলিফ প্রেসের মালিক মোহাম্মদ উল্যাহর সাথে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবু তাহেরের জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে মারামারি হয়। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ১৮ জুন মামলা করেন আবু তাহের। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে প্রধান আসামি মোহাম্মদ উল্যাহ।

মোহাম্মদ উল্যাহর ছেলে হাবিবুর রহমান বলেন, 'বাবাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ রোববার রাত ১২ টার আমাদের বাড়িতে আসে। এসময় বাড়ির ছাদ থেকে গাছ বেয়ে নিচে নেমে পুকুরে লাফিয়ে পড়ে বাবা। এসময় পুলিশ ও মামলার বাদীর লোকজন পুকুরের চারপাশ ঘেরাও করে রাখে। এক পর্যায়ে পুলিশ বাবাকে উদ্ধার করে পানি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।'

নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগমের দাবি, বাদীপক্ষের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা পুলিশের সঙ্গে গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নিয়েছিল। যার কারণে ভয়ে তার স্বামী পানিতে লাফিয়ে পড়েন ও পরে মারা যান। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

মামলার তদন্তকারী ও অভিযানে নেতৃত্বদানকারী বেগমগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক এসআই সাহেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রোববার মধ্যরাতে তাকে একদল পুলিশ নিয়ে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়েন। পানি থেকে তুলে আনার পর তিনি অসুস্থ বোধ করলে পরিবারের জিম্মায় রেখে পুলিশ চলে আসে। রাত ১টার দিকে তাকে চৌমুহনী শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক না থাকায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৩টার দিকে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, যেহেতু এ মৃত্যু নিয়ে পরিবারের অভিযোগ রয়েছে, সেহেতু লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো. শাহজাহান শেখ বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের ভয়ে পানিতে লাফিয়ে পড়ে ওই ব্যক্তি প্রথমে অসুস্থ হন, পরে স্ট্রোক করে মারা যান। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় আজ বিকেল পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

1h ago