কল্যাণ ট্রাস্টের নাম ব্যবহার করে ‘ব্যক্তিগত’ চিঠি
প্রাচীন বৌদ্ধ মূর্তি সিলগালা করার ঘটনায় ‘বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পরিলক্ষিত হয়নি’ বলে সুপারিশপত্র দিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া।
তবে, কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয়দত্ত বড়ুয়া দাবি করেছেন, ‘কল্যাণ ট্রাস্টের কাউকে কিছু না জানিয়ে ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ ব্যক্তিগতভাবে এই চিঠি দিয়েছেন।’
গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কল্যাণ ট্রাস্টের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।’
গত ১১ মে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার বিরুদ্ধে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী আসাংম্রাই (বুড়া গোঁসাই) বুদ্ধ মূর্তি সিলগালা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
যোগাযোগ করা হলে ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ নিজেকে ‘কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ করি, তাই দলের দুর্নাম রোধ করার জন্য এই চিঠি দিয়েছি।’
‘আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি পুরো বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি’, বলেন সুপ্ত ভূষণ।
তার স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি গত ১৭ মে বান্দরবান জেলা পরিষদে পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বারবার ফোন করা হলেও তা রিসিভ করেননি বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা।
বাংলাদেশ জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক উনু চিং মারমা বলেন, ‘প্রাচীন বৌদ্ধ মূর্তি সিলগালা করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সমগ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।’
‘একটা অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য কল্যাণ ট্রাস্টের কাউকে প্রভাবিত করা নিন্দনীয় অপরাধ’, বলেন তিনি।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি রাহুল বড়ুয়া বলেন, ‘কল্যাণ ট্রাস্ট বিগত প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ধরে গবেষণালব্ধ কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি এখন স্বেচ্ছাচারী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। তারা সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ চর্চা করে না। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধমীর্য় প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। কিন্তু, কল্যাণ ট্রাস্ট সেখানে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। যা সত্যিই দুঃখজনক।’
মন্দির কমিটির সেক্রেটারি বা চ মং বলেন, ‘গতকাল আমরা বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:
Comments