বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান থাকছেন না কিশোর

ছবি: সংগৃহীত

স্বেচ্ছাসেবকদের সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রধান পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তিনি এই ঘোষণা দেন।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর অনেক আগে থেকেই কাজ করছিলো সংগঠনটি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সহায়ক বিষয় নিয়ে তারা কাজ করে শুরু করে। তাদের ‘এক টাকায় আহার’ নামের কর্মসূচি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।

তবে করোনা শুরুর পর গণপরিবহনে জীবাণুমুক্তকরণ, সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য খাবার, চলতি পথে পথিকের ক্ষুধা নিবারণ, শহরের রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটানো কিংবা রাস্তার অসহায় কুকুরকে খাওয়ানো থেকে শুরু করে নানা কাজে যুক্ত প্রতিষ্ঠানটির স্বেচ্ছাসেবকরা।

আজ সংগঠনটির ফেসবুক পেজ থেকে বলা হয়, বিদ্যানন্দ নামটি দিয়েছেন এক মুসলিম ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। ‘আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন’ স্লোগানে তিনি এই নাম দিয়েছিলেন। অনেকেই ব্যক্তির নাম থেকে বিদ্যানন্দ নামের উদ্ভব ভেবে ভুল করেন। এজন্য তারা নাম পরিবর্তন করতে চাইলেও স্বেচ্ছাসেবকরা রাজি হননি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ বলেন, ‘কিশোর কুমার দাশ চেয়ারম্যান পদে থাকবেন না। কিন্তু, তিনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আজীবন তিনি এই প্রতিষ্ঠানে থাকবেন। আমরা নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করছি। আমরা আগে যেভাবে কাজ করেছি এখনও সেভাবে করবো।’

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশ চট্টগ্রামের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রবাসী। তিনি এমন একটি আইটি কোম্পানিতে কাজ করতেন যারা থার্ড পার্টি হিসেবে গুগলের কাজ করতো। তিনি বিদেশে থেকেই সংগঠনটির কাজে যুক্ত আছেন।

আজকের ফেসবুক ঘোষণায় রয়েছে, কিশোর কুমার দাশের বিষয়ে বলা হয়, বিদ্যানন্দের প্রবাসী উদ্যোক্তা সশরীরে খুব অল্পই সময় দিতে পারেন। ৯০ ভাগ মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকরাই চালিয়ে যান বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবুও উদ্যোক্তার ধর্ম পরিচয়ে অনেকেই অপপ্রচার চালায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। সে সমস্যাও আশা করি সমাধান হয়ে যাবে। বিদ্যানন্দ প্রধান গত মাসেই পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।

ঘোষণায় বলা হয়, বিষয়টি পরে প্রকাশ করতে চাইলেও অনেকগুলো পেজ থেকেই প্রচুর নেতিবাচক তথ্য শেয়ার হওয়ার কারণে তারা এখুনি তা শেয়ার করছেন। ঘোষণায় আরও বলা হয়, পদ আঁকড়ে থাকার মানসিকতার এই সমাজে উল্টা পথে হাঁটতে পারার জন্য গর্ব হচ্ছে। আর প্রধানের পদ ছাড়লেও বিদ্যানন্দ ছাড়ছেন না কিশোর কুমার দাশ।

পরে রাত আটটার দিকে বিদ্যানন্দের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া অপর পোস্টে কিশোর কুমার দাশ লিখেন, ‘আমার সিদ্ধান্তগুলোতে পাগলামি এবং আবেগের প্রভাব যুক্তির চেয়ে বেশি থাকে। ক্ষমা চাচ্ছি এই সীমাবদ্ধতার জন্য। আজকে আমার এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেটা নিয়ে আমার বক্তব্য প্রকাশ করলাম-

আমি বিদ্যানন্দ ছাড়ছি না, পরিচালনা পর্ষদেই থাকছি। শুধু দায়িত্ব পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। পরিচালনা পর্ষদে এখনো সে আবেদন গ্রহণ করেনি।

কোনো চাপে এই সিদ্ধান্ত নেইনি আমি। শারীরিক ক্লান্তি এবং ব্যক্তিগত আবেগের কাছে হার মেনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।

সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় এতদূর আসা। কিছু মন্দ লোক অপপ্রচার করে সেটা খুবই নগণ্য।

যদি আমার আগের বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাই এবং অনুরোধ থাকবে, আমাদের পক্ষে লিখতে গিয়ে অনুমানভিত্তিক অন্যকে দোষারোপ করবেন না।’

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Election in first half of ’26 is not unreasonable, but Dec ’25 is doable

Whatever the differing stances of various political parties may be, people in general would prefer to exercise their franchise.

10h ago