‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র অফার প্রথমে আমার কাছেই এসেছিলো: ফেরদৌসী মজুমদার

Ferdaosi Majumder
ফেরদৌসী মজুমদার। ছবি: শাহরিয়ার কবির হিমেল/স্টার

ফেরদৌসী মজুমদার গুণী অভিনেত্রী। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনি। থিয়েটার, চলচ্চিত্র, বেতার, টিভি নাটক- সব অঙ্গনেই তার পথচলা। এখনো তিনি থিয়েটার ছাড়েননি। বিটিভির ইতিহাসে ‘সংশপ্তক’ নাটকে হুরমতি চরিত্রে অভিনয় করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। অনেকদিন পর নতুন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন ফেরদৌসী মজুমদার। নন্দিত এই অভিনেত্রী ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র মতো আলোচিত চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব প্রথমে তার কাছে এসেছিলো।

অভিনয় শিল্পের সব মাধ্যমেই আপনি সম্পৃক্ত। থিয়েটারে এখনো সরব, সম্প্রতি একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন?

বেতার নাটক, টিভি নাটক, মঞ্চ- এই তিনটি অনেক বেশি করলেও চলচ্চিত্র বেশি করা হয়নি। ‘মেঘলা আকাশ’, ‘মায়ের অধিকার’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্র করেছি। এজন্য আফসোসও কাজ করে ভেতরে ভেতরে। এখন নতুন একটি চলচ্চিত্র করছি। চলচ্চিত্রটির নাম ‘ফ্রম বাংলাদেশ’। শাহনেওয়াজ কাকলী পরিচালনা করছেন মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক এই চলচ্চিত্রটি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো বলেই বাংলাদেশ পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো বলেই মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি। কাজেই মুক্তিযুদ্ধের গল্পের কিছু হলে কাজ করতে ইচ্ছে করে। সেভাবেই এটাও করছি।

পরিচালক শাহনেয়াজ কাকলী সরাসরি আমাকে অফার করেনি। সে প্রথমে বলেছে আমার মেয়ে ত্রপার কাছে। ত্রপা বলেছে আমাকে। ত্রপার মতামতকে আমি গুরুত্ব দিই। আমার স্বামীর মতামতকে গুরুত্ব দিই। তিনিও করতে বললেন। তারপর স্ক্রিপ্ট পাঠানো হলো। আমি পড়লাম। পড়ার পর দেখলাম গল্প ও চরিত্রটি সুন্দর। কাজটি করা যায়। তারপরই রাজি হই।

দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে নানারকম চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং আপনার রয়েছে সমৃদ্ধ অভিনয়জীবন। নতুন চলচ্চিত্রের চরিত্রটি সম্পর্কে জানতে চাই?

এই চলচ্চিত্রে আমার অভিনীত চরিত্রের নাম কাননবালা। একটি বাড়ির প্রধান তিনি। তার কথায় বাড়ির সবাই উঠ-বস করেন। তার শাসন বাড়ির সবাই মেনে চলেন। খুব দাপুটে নারী কাননবালা। অভিনয় করার যথেষ্ট সুযোগ ছিলো। বেশিরভাগ কাজ শেষ করেছি। সামান্য কাজ বাকি আছে। এই সিনেমায় ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেখানো হয়েছে।

পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনে পছন্দ হয়নি এমন কাজ কখনো করেছেন?

না। এই দিক থেকে আমি খুব শক্ত। গল্প ও চরিত্র পছন্দ না হলে কখনো কাজ করি না। অভিনয়জীবনে এজন্য অনেক কাজ করিনি। নতুন সিনেমাটির কথাই বলি। প্রথমে গল্পটি পড়েছি। চরিত্র মনের মতো হয়েছে। তারপরই কাজটি করতে রাজি হয়েছি।

শুরুতে আপনি আফসোসের কথা বলেছিলেন? কী সেই আফসোস?

আফসোসটা কিন্তু টিভি নাটক নিয়ে নয়। বেতার নাটক নিয়েও নয়। থিয়েটার নিয়েও নয়। আফসোসটা চলচ্চিত্র নিয়ে। ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র মতো আলোচিত চলচ্চিত্রের অফার প্রথমে আমার কাছে এসেছিলো। তখন আমার মেয়ে ত্রপা ছোট ছিলো। ছোট মেয়েকে রেখে বাইরে গিয়ে সিনেমা করতে চাইনি। তাই করিনি। পরে ডলি আনোয়ার করে। আমিই ডলির নাম প্রস্তাব করেছিলাম।

চাইলে চলচ্চিত্রে আরও বেশি কাজ করতে পারতাম। কারণ, চলচ্চিত্র অনেক বছর একজন শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখে। এই মাধ্যমটা নিয়ে আফসোস আছে আজও।

আপনি এখনো মঞ্চে সরব। মঞ্চটাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সব সময়?

মঞ্চই আমার সত্যিকারের ভালোবাসা। মঞ্চ কখনোই ছাড়িনি। মঞ্চের সঙ্গে কখনো আপস করিনি। অনেক কাজ ছেড়েছি মঞ্চের জন্য। সবার আগে মঞ্চকে প্রাধান্য দিয়েছি। এখনো তাই। এটা আমার কমিটমেন্ট- মঞ্চ সবার আগে। আর কিছু করি, না করি- মঞ্চে কাজ করবোই।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam threatens int'l legal action against govt over asset freezing: FT

Alam says his family's bank accounts were frozen, they were subjected to travel bans, and they lost control of their companies, all while facing investigations for alleged money laundering without formal notification.

11m ago