উপকূল ধরেই পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ‘ফণী’

WB photo
৩ মে ২০১৯, কলকাতার পার্শ্ববর্তী উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় সকাল থেকেই শুরু প্রবল বৃষ্টি ও সঙ্গে হাওয়া। ছবি: স্টার

নির্ধারিত সময়ের আগেই ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে আঘাত করেছে প্রবল শক্তিশালী সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। এখন উপকূল ধরেই পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। সন্ধ্যার আগেই ‘ফণী’-র এ রাজ্যে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কলকাতার আবহাওয়াবিদ জে কে মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ফণী’ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি গতিবেগ নিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব-মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা হয়ে বাংলাদেশের খুলনায় প্রবেশ করবে গত দুই দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গের এই ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ প্রবেশ করতে পারে আজ (৩ মে) সন্ধ্যার আগেই। ইতিমধ্যে এই প্রভাবে পূর্ব-মেদিনীপুরের সমুদ্রসৈকত দিঘা এবং মন্দারমণিতের প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে।

পূর্ব-মেদিনীপুর জেলা জুড়েই ঝড় শুরু হয়েছে। পশ্চিম-মেদিনীপুরেও বইছে প্রবল হাওয়া সঙ্গে বৃষ্টিপাত। এর প্রভাবে হাওড়া এবং কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাতেও শুরু হয়েছে বৃষ্টি।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে জানা গিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আগেই উড়িষ্যার উপকূল পুরীতে আছড়ে পড়ে ‘ফণী’। ঘণ্টায় ১৯৫ থেকে ২০০ কিলোমিটার গতি নিয়ে সে স্থলভাগ ধরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দিকে এগিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু, সুপার সাইক্লোনটি সমুদ্রপথ এবং উপকূল ধরেই এগিয়ে আসছে। ফলে কলকাতা, উত্তর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে খোলা হয়েছে একটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেন্টার।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ডায়মন্ড হারবার, সুন্দরবন সন্দেশখালী, ধরখালি, কাকদ্বীপ, বকখালী, উত্তর চব্বিশ পরগনার হাসনাবাদ, হেলেঞ্জাসহ বিভিন্ন এলাকায় চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে উদ্বেগে না থেকে বরং সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী সময় দ্রুত দুর্যোগ মোকাবেলা দলকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। কলকাতা পৌরসভা, কলকাতা পুলিশ, রাজ্য পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়েছে। রাজ্যের দমকল বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনো ধরণের দুর্যোগ মোকাবেলায় কয়েক হাজার সেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাসপাতালগুলোকেও। জরুরি পরিষেবাদানকারি সংস্থার সব কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে ‘ফণী’র প্রভাবে ব্যাহত হয়েছে স্থানীয় রেল পরিষেবা। কলকাতা, হাওড়া থেকে শতাধিক রেল বাতিল করা হয়েছে। এর আগে দুরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়েছে ১০৩টি। অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা এবং তামিলনাড়ুর সঙ্গে প্রায় সব ট্রেন যোগাযোগ বাতিল।

কলকাতা বিমানবন্দর আজ (৩ মে) রাত থেকে বন্ধ থাকবে আগামীকাল (৪ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ এতো বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিলো এই অঞ্চলে। সেবার প্রায় দশ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো। এর প্রায় দশ বছর পর ২০০৯ সালে আরেক সুপার সাইক্লোন ‘আয়লা’য় মৃত্যু হয়েছিলো ১৪৯ জনের। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, গত দুটি সুপার সাইক্লোন থেকেও বেশি শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।

আরও পড়ুন:

উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ‘ফণী’, বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৭৫ কিমি

উড়িষ্যায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ‘ফণী’

পশ্চিমবঙ্গে সতর্কতা জারি, রাতে কলকাতা বিমানবন্দর বন্ধ

উপকূল ধরেই পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ‘ফণী’

উড়িষ্যায় নিহত ২

মধ্যরাতে মূল আঘাত

Comments

The Daily Star  | English

5 Edn institutions: Academic life of 40,000 in disarray

Academic activities in five major educational institutions in Dhaka remain suspended for the past week amid multiple incidents of clashes, affecting at least 40,000 students.

3h ago