পশ্চিমবঙ্গে কে কতো আসন পাবে- তুমুল তর্কযুদ্ধে নেমেছেন মমতা-মোদি!

তিন দফায় ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ১০টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ৪২ আসনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নির্বাচনে বাকি চার দফায় শেষ হবে আরও ৩২ আসনে ভোটগ্রহণ পর্ব।
tm and bjp
তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির দলীয় প্রতীক। ছবি: সংগৃহীত

তিন দফায় ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ১০টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মোট ৪২ আসনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নির্বাচনে বাকি চার দফায় শেষ হবে আরও ৩২ আসনে ভোটগ্রহণ পর্ব।

কিন্তু, দশটি আসনের মধ্যে কে বা কোন দল কতোগুলো আসন পাবেন, বা পাবে তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে তুমুল তর্ক-যুদ্ধ শুরু হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেস দাবি, দশটি আসনে বিজেপি হারবে। অন্যদিকে বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূলের সূর্য ডুবতে শুরু করেছে।

তবে যে দশটি আসন নিয়ে তর্ক চলছে সেই আসনগুলোর অতীত ফলাফল এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে নির্বাচনের দশটির মধ্যে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট- এই চার আসন ছিলো রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের। দার্জিলিংয়ের একটি আসন ছিলো কেন্দ্রের শাসক বিজেপির।

বাকি পাঁচটি আসনের মধ্যে মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ এবং জঙ্গীপুর তিনটি কংগ্রেসের এবং রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন ছিলো বামফ্রন্টের।

আজ (২৫ এপ্রিল) নদীয়ায় নির্বাচনী সভায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিন দফার নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকে গোল্লা দিয়েছে।

অন্যদিকে আজ, রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোট প্রচারে এসে বিজেপি নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিন দফার যে আসনগুলোতে ভোট হয়েছে সেখানে দিদির সূর্য ডুবতে চলেছে।

যদিও বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এই আসন পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরের এই জেলাগুলোতে মূলত প্রভাব কংগ্রেসেরই বেশি। এরপর বামফ্রন্টেরও বড় ঘাঁটি সেখানে। যদিও এবার মালদা উত্তর আসনের কংগ্রেস সাংসদ মৌসুম বেনজির নূরকে দলে নিয়ে এসে সেখানে তৃণমূল আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে।

তবে সেটি কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ মালদায় এ বি এম গণি খান চৌধুরী নামের একটি মিথ কাজ করে। গণি খানের ভাগ্নি মৌসুম বেনজির নূর। তার তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যাওয়া স্থানীয় সাধারণ মানুষ ভালো ভাবে মেনে নেননি।

মালদা দক্ষিণ আসন কংগ্রেসের ডালু খান চৌধুরী তিনি গণি খান চৌধুরীর ভাই। ফলে তার জেতা সেখানে নিশ্চিত বলা চলে।

ওদিকে, দার্জিলিং আসনে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। মোর্চার দুই পক্ষ তলে তলে বিজেপিকে অক্সিজেন দিয়েছে। এমনকী, সাধারণ মানুষও বিজেপির দিকে ঝুঁকে রয়েছেন। কেননা, বিজেপির প্রার্থী রাজু বাস্ত পাহাড়ের সন্তান। অন্যদিকে বামফ্রন্টের সমন পাঠকও যথেষ্ট শক্তিশালী। সেখানে তৃণমূলের বেশি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই।

কোচবিহারের নীশিথ প্রামাণিকের সঙ্গে লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন বামফ্রন্টের মন্ত্রী পরেশ অধিকারি। শক্তিশালী তিনিও। লড়াই সেখানে দুই মুখি।

রায়গঞ্জের আসনটি বামফ্রন্টের তা তৃণমূল কংগ্রেসও জানে।

বালুরঘাটে তৃণমূলের বর্তমান সাংসদ নাট্যকার অপির্তা ঘোষকে নিয়ে সেখানে যথেষ্ট ক্ষোভ ছিলো ভোটারদের মধ্যে। তাকে প্রার্থী করায় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা বিদ্রোহ করেছিলেন। তাই সেখানে তার আসনটা এবার নড়বড়ে।

জঙ্গীপুর কংগ্রেসের ঘাঁটি। সেখানে রয়েছেন প্রণব-পুত্র অভিজিৎ মুখার্জি। তবে এবার বিজেপির মাহফুজা খাতুন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছেন। এই আসন বিজেপির দিকেও যেতে পারে।

আলিপুরদুয়ার আসনের তৃণমূলের প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীও। সেখানে আসন পাওয়াটা ফিফটি ফিফটি সম্ভাবনা দু-পক্ষেরই।

মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের ঘাঁটি হলেও এই আসনটি বামফ্রন্টের বদরুদ্দোজা খান ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ২০১৪ সালে। কিন্তু, এবার সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ভোট কাটাকাটির রাজনীতির শিকার হতে পারেন তিনি। ফলে বামফ্রন্টের এই আসনটি হাতছাড়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল এখানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

জলপাইগুড়ি আসনে তৃণমূল এগিয়ে আছে এবারও।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যের ৪২ আসনই পাবে তৃণমূল কংগ্রেস। তা নিয়ে তিনি দিল্লিতে সরকার গড়বেন।

অন্যদিকে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের দাবি, তারা রাজ্যে কমপক্ষে ২৩ আসন পাবে।

তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দশ আসনের মধ্যে তৃণমূল তার আগের আসন যেমন হারাতে পারে, তেমন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের আসনও কমতে পারে। আসন বাড়বে বিজেপিরই। তবে সেই সংখ্যাটা কতো তা জানা যাবে ২৩ মে।

Comments

The Daily Star  | English

Unrest emerges as a new threat to RMG recovery

The number of apparel work orders received by Bangladeshi companies from international retailers and brands for the autumn and winter seasons of 2025 dropped by nearly 10 percent compared to the past due to major shocks from the nationwide student movement and labour unrest in major industrial belts over the past two and half months.

10h ago