তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনী প্রচার

ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ভিসার শর্ত ভাঙার অভিযোগ

Ferdous poll campaign
পশ্চিমবঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ আসনে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে ফেরদৌস। ছবি: স্টার

ভারতের ভিসা আইনের শর্ত ভাঙার অভিযোগ উঠছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ফেরদৌসের বিরুদ্ধে। সে কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরদৌসের ভারতের প্রবেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সূত্র এই তথ্য দিয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। 

গত রোববার (১৪ এপ্রিল) উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালিয়েছেন বাংলাদেশ ও কলকাতার জনপ্রিয় এই অভিনেতা। হুডখোলা জিপে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে ছিলেন স্থানীয় অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা এবং অভিনেত্রী পায়েলও।

রবিবাসরীয় ভোটের প্রচারে বিদেশি নাগরিকের অংশ নেওয়ার ঘটনা নিয়ে নির্বাচনের চলমান আবহে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বিজেপি, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট পৃথকভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে মৌখিকভাবে। তবে বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে আজ দুপুরে একটি প্রতিনিধি দল তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রচার করায় ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ভারতের ভিসা আইন ভঙ্গ এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভাঙার অভিযোগ করে।

শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের যে প্রার্থীর পক্ষে ফেরদৌস প্রচার করেছেন সেই তৃণমূল নেতা কানাইলাল আগরওয়াল প্রার্থীতা বাতিল করার আবেদন জানানো হয় বিজেপির পক্ষ থেকে।

যদিও শাসক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনও এই বিষয়ে মুখ খোলেনি।

তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে সেই ফেরদৌসকে পাওয়া যায়নি তার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য।

একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যে কোনও দেশের ভিসার জন্য নির্দিষ্ট কিছু আইন থাকে। এমন কি কোনও অভিনেতা যদি শুধু কোনও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ভারতে আসেন, তবে তাকে ভিসা নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হবে। আর যদি শুধু ভ্রমণের জন্য আসেন তবে ভ্রমণ ছাড়া তিনি কোনও কিছুই করতে পারবেন না। রাজনৈতিক কোনও বিষয়ে বিদেশি হিসেবে তিনি থাকতে পারবেন না। এমন কি নির্বাচনী প্রচারেও থাকাও তার ভিসার শর্ত ভাঙার সামিল।

সে কারণেই পরবর্তীতে ফেরদৌস ভারতের আসতে চাইলে যদি তার থেকে ভিসা সীমাবদ্ধ করা হয়, সেটা খুব অস্বাভাবিক কিছু হবে না।

তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, যদি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বাংলাদেশের গিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচার চালাতেন তবে একইভাবে সে দেশের এটা নিয়ে রাজনৈতিক দল কিংবা গণমাধ্যম প্রশ্ন তুলতে তুলতে পারতো।

রবিবার রায়গঞ্জের করণদিঘি থেকে তৃণমূলের প্রার্থীর নির্বাচন শোভাযাত্রাটি প্রায় তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। যেহেতু ওই অঞ্চলে মুসলিম ভোটার সংখ্যা বেশি এবং পূর্ববঙ্গের মানুষের বসবাস, তাই নির্বাচনের ভোট পাওয়ার কৌশল হিসাবে বাংলাদেশের অভিনেতাকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে দেবশ্রী রায়কে, কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি এবং বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। এই প্রচারণা নিয়ে এই তিন প্রার্থীরা অভিযোগ নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙেছেন তৃণমূল প্রার্থী কানাইলাল আগরওয়াল এবং অবশ্যই ভিসার শর্তও ভেঙেছেন বাংলাদেশের অভিনেতা ফেরদৌস।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই বিষয়ে জানান, মমতা ব্যানার্জির আইন মানেন না। তাই তার দলের কেউ সেটা করেন না। ফেরদৌস বিদেশি নাগরিক, তাকে এনে নির্বাচনের বিধি ভেঙেছে তৃণমূল।

দিলীপ ঘোষ রহস্য করে আরও বলেন, মমতা ব্যানার্জি কোনও দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে এনেও তার দলের হয়ে প্রচার চালাতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus in Rome to attend Pope Francis’ funeral

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus reached Rome yesterday to attend the funeral of Pope Francis.

2h ago