প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে
গতকাল (১১ এপ্রিল) ভারতে প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের গড় হার ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, প্রথম দফার নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে বিহারে। সেখানে ভোটের হার ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ।
পাশাপাশি, জনসংখ্যার দিক থেকে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ভোট পড়েছে ৫৯,৮ শতাংশ। অন্ধ্রপ্রদেশে এক সঙ্গে ১৭৫টি বিধানসভা ও ২৫টি লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া হয়। সেখানে দুটি কেন্দ্রের মিলিয়ে গড়ে ভোট পড়েছে ৭৮,৮ শতাংশ। এছাড়াও, সিকিমে ভোট পড়েছে ৬৯ শতাংশ এবং অরুণাচলে ভোট পড়েছে ৫৭ শতাংশ।
গতকালের প্রথম দফা নির্বাচনের পরেই বিভিন্ন রাজ্যে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি। বাম থেকে শুরু করে কংগ্রেসের পাশাপাশি খোদ বিজেপিও অভিযোগ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। তবে কারচুপির অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীরাই সরব হয়েছেন সবচেয়ে বেশি।
পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রায় ১০ শতাংশ বুথে বিরোধীদের বসতে দেওয়া হয়নি। বামেরাও একই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ শাখার বিজেপির তরফেও ভোটে তৃণমূল ‘ছাপ্পা’ দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, কোন কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, আর কোন কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না সেটা ভালো করে বিবেচনা করা উচিত।
পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবারে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি শুরু করে দিয়েছে।
সব মিলিয়ে প্রথম দফার ভোট পর্ব শেষ হতে না হতেই অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগে সরগরম ভারতের রাজনীতি। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, যে কোনও ভোটে ভোটদানের হার বেশি হওয়া মানেই শাসকবিরোধী হাওয়ার আভাস। তার উপর ভোটদানের ট্রেন্ড যদি সাত সকালেই বেশি থাকে তাহলে স্পষ্টতই বিরোধী ভোটের অনুকূলে হাওয়া বোঝা যায়।
সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার কেন্দ্রে এই দুটি ট্রেন্ডই ছিলো যথেষ্ট। গতকাল সাত সকালেই বিভিন্ন বুথে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যায়। ফলে শাসকের পায়ের তলার জমি নড়বড়ে হচ্ছে বুঝেই হয়তো সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ একের পর এক অভিযোগ তুলতে থাকেন। এমনকি, তিনি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদেরকেও ফোন করতে থাকেন।
ফলে প্রথম দফার নির্বাচন শেষে পশ্চিমবঙ্গের শাসক শিবিরে যেমন দুশ্চিন্তার কালো মেঘ প্রসারিত হতে শুরু করেছে, তেমনি অন্যদিকে বিজেপি শিবিরের হাসি প্রশস্ত হতে আরম্ভ করেছে।
Comments