সিপিএম-ছুট ক্যাডাররাই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে বিজেপির অন্যতম ভরসা
সিপিএম-ছুট ক্যাডারদের তৈরি করা হাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে ভাসছে বিজেপি। আর বিজেপিকে রুখতে তৈরি তৃণমূল। এই কেন্দ্রে সিপিএমের ভোট ব্যাংককে কাজে লাগিয়ে এবারে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি।
গত লোকসভা নির্বাচনে এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে সিপিএম ৪ লক্ষ ২৫ হাজারের মতো ভোট পেয়েছিলো। সেখানে বিজেপি পেয়েছিলো ২ লক্ষ ২১ হাজারের মতো ভোট। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের প্রায় সব কেন্দ্রেই দ্বিতীয় স্থানে ছিলো সিপিএম-কংগ্রেস জোট।
কিন্তু, এবারে সিপিএম-কংগ্রেসের সেই হাওয়া গোত্তা খেয়ে গেরুয়া শিবিরে ঢুকে গিয়েছে। তবে মজার বিষয় হলো, এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে বিজেপির কোনও সংগঠন না থাকলেও হাওয়া আছে যথেষ্ট। জলপাইগুড়ি থেকে ময়নাগুড়ি, ধুপগুড়ি সর্বত্রই সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজেপিকে নিয়ে চর্চা বেড়েছে। পথচলতি সাধারণ মানুষ এবারের ভোটে সিপিএমকে নাম্বার দিতে নারাজ। প্রায় সকলেই জানিয়েছেন, এবারে মূল লড়াই হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে।
তবে স্থানীয় তৃণমূলীদের দাবি, এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের বহু জায়গায় তৃণমূলকে হারাতে সিপিএম পরিকল্পনা মাফিক গেরুয়া শিবিরে তাদের লোকজনকে ভিড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এখানে বিজেপির রঙ গেরুয়া নয়, লাল। এখানে তৃণমূলের প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মণ।
এই কেন্দ্রে বিজেপি মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে যেমন প্রচার চালাচ্ছে, তেমনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাজে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের কমিশন খাওয়া, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্ধ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোর করে তৃণমূলের ভোট জেতাকে প্রচারের হাতিয়ার করেছে।
জলপাইগুড়ি জেলায় মাঝে-মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে বিজেপি ভালো ফল করলেও সাংগঠনিকভাবে তারা বেশ দুর্বল। সেখানে তুলনামূলকভাবে তৃণমূলের শক্তি বেশি।
এই জলপাইগুড়ি লোকসভার সাতটি বিধানসভার একটিতেও বিজেপির দখলে নেই। গোটা লোকসভার মধ্যে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দুটি মাত্র পঞ্চায়েত তারা দখল করেছে। তবুও ভোটের ময়দানে গেরুয়া শিবির নজর কেড়েছে। এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ডাঃ জয়ন্ত রায়। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, “তৃণমূলের চুরি, দুর্নীতি দেখে সাধারণ মানুষ আমাদের চাইছে, তাই আমরা না চাইলেও মানুষ আমাদের জিতিয়ে দেবেন।”
এই কেন্দ্রে সিপিএমের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন, ভগীরথ রায়। তবে এখানে সিপিএমের দাবি, একদিকে তৃণমূলের দুর্নীতি, অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষ এবারে সিপিএম প্রার্থীকেই জয়ী করবেন।
সব মিলিয়ে এই কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে মূল লড়াই হবে বিজেপি বনাম তৃণমূলের মধ্যে। আর সেখানে সিপিএমের দলছুট ভোটাররা এবং মোদি হাওয়াই বিজেপির একমাত্র ভরসা।
তবে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসও লড়াইতে রয়েছে। এবারে কংগ্রেসের প্রার্থী মণি কুমার ডর্নাল।
Comments