যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা ‘গুপ্তচর বেলুন’
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে চীনের 'গুপ্তচর বেলুন' উড়ে যেতে দেখা গেছে। এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তার চীন সফরের ঘটনার অল্প কয়েকদিন আগে এ ঘটনায় ২ দেশের মাঝে নতুন করে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তারা 'গুপ্তচর বেলুনের' গতিবিধি অনুসরণ করছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুরোধে প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা বেলুনটিকে গুলি করে ভূপাতিত করার বিষয়টি বিবেচনা করেছিলেন। তবে বেলুনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে অনেক জানমালের ক্ষতি হতে পারে বলে তারা বাইডেনকে বেলুনে গুলির আঘাত না করার সুপারিশ দেন। গতকাল এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
নাম না প্রকাশের শর্তে কর্মকর্তা বলেন, 'নজরদারির জন্যেই এ বেলুন পাঠানো হয়েছে'।
কর্মকর্তা জানান, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। সেখানে স্পর্শকাতর বিমান ঘাঁটি ও কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভূগর্ভস্থ সাইলো রয়েছে। তবে পেন্টাগনের বিশ্বাস, তারা তেমন কোনো ঝুঁকির মুখে পড়েনি।
কর্মকর্তা বলেন, 'এই বেলুনের গোপন তথ্য সংগ্রহের সক্ষমতা খুবই সীমিত এবং এটি বড় কোনো হুমকি নয়'।
কয়েকদিনের মাঝেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ২ পরাশক্তির মাঝে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রশমন এই সফরের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
২০১৮ সালের পর এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষ কূটনীতিক চীন সফরে যাচ্ছেন।
বাণিজ্য ও মেধাসত্ত্ব নিয়ে বিবাদ ছাড়াও ২ দেশের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ান নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, বেলুনটি মার্কিন আকাশসীমায় 'কয়েক দিন আগে' প্রবেশ করেছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বেলুনটির গতিবিধির ওপর নজর রাখছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র প্যাট রাইডার নিশ্চিত করেছেন, এখনও মার্কিন আকাশসীমায় বেলুনটির গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে রাইডার বলেন, 'বেলুনটি এ মুহূর্তে বাণিজ্যিক বিমান ওড়ার স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে অনেক উঁচুতে রয়েছে। এই বেলুন মাটিতে থাকা মানুষের প্রতি কোনো হুমকির সৃষ্টি করছে না'।
জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের বেলুন দেখা গেছে, তবে আর আগে কোনোটি এতো দীর্ঘ সময় ধরে আকাশে থাকতে পারেনি।
'চীনকে এ বিষয়টির গুরুত্ব সম্পর্কে' জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন পেন্টাগনের কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি টুইট বার্তায় বলেন, 'মার্কিন সার্বভৌমত্বের প্রতি চীনের কাণ্ডজ্ঞানহীন অবজ্ঞা একটি অস্থিতিশীল উদ্যোগ এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চুপ থাকতে পারেন না'।
Comments