স্মিথসোনিয়ান চিড়িয়াখানায় ১৭ বছর বয়সী সিংহের যন্ত্রণাহীন মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত স্মিথসোনিয়ান জাতীয় চিড়িয়াখানার সিংহ-রাজ হিসেবে বিবেচিত আফ্রিকার সিংহ লিউক ১৭ বছর বয়সে মারা গেছে।
আজ যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, ১৯ অক্টোবর সিংহটিকে ইউথেনাইজ (মানবিক ও যন্ত্রণাহীন মৃত্যু) করা হয়। লিউক বেশ কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চিড়িয়াখানার অন্যতম কিউরেটর ক্রেইগ সাফো বলেন, 'লিউক বড় বিড়াল-শ্রেণীর প্রাণীদের প্রদর্শনীতে প্রকৃতপক্ষেই "রাজা" ছিল। সে তার সঙ্গী নাবা ও শেরার সঙ্গে খুবই কোমল আচরণ করতো। সে (লিউক) তার ১৩টি শাবকের জন্য একজন অত্যন্ত ধৈর্যশীল বাবা ছিল এবং তাদেরকে নিরাপদ রাখতো।'
তিনি আরও জানান, লিউক তার শাবকদের জন্য, তার প্রজাতির টিকে থাকার জন্য এবং চিড়িয়াখানা দেখতে আসা লাখো দর্শনার্থীদের মনে দাগ কাটতে পেরেছে, যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে।
'তার কারণে দর্শনার্থীরা আফ্রিকার সিংহদের ব্যাপারে আরও জ্ঞান অর্জন করতে এবং এই প্রজাতির প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছে', যোগ করেন তিনি।
এই সিংহটি ২০১৬ থেকে তার পেছনের ডান পায়ে অস্বস্তি ও জড়তা অনুভব করছিল। চিড়িয়াখানার পশু ডাক্তাররা সিটি স্ক্যান করে তার মেরুদণ্ডে একটি ক্ষত খুঁজে পান, কিন্তু আরও জটিলতা দেখা দেওয়ার ঝুঁকিতে তারা অস্ত্রোপচারের দিকে জাননি। তাকে স্টেরয়েড, মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ, ত্বকের গভীরে লেজার থেরাপি ও আকুপাংচারের মতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।
অক্টোবরে চিড়িয়াখানার রক্ষণাবেক্ষণকারীরা জানতে পারেন, লিউকের ওজন কমে গেছে। ১৯ অক্টোবরে এক পরীক্ষায় জানা যায় তার যকৃতে পাথরের মতো উপকরণ জমে গেছে। এছাড়াও, তার মেরুদণ্ডের রোগও ছড়িয়ে বেশ জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
'সার্বিক বিবেচনায়, দীর্ঘ মেয়াদে লিউকের জীবনযাপনের গুণগত মান বেশ কম হবে বলে পশুদের যত্নে নিয়োজিত দলের সদস্যরা মত প্রকাশ করেন। ফলে তারা সম্মিলিতভাবে তাকে মানবিক ও যন্ত্রণাহীন মৃত্যু উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন', সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাখ্যা করে সিম্থসোনিয়ান চিড়িয়াখানা।
২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি পশু অভয়ারণ্যে লিউকের জন্ম হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের কাছে লিউক অত্যন্ত মূল্যবান পশু হিসেবে বিবেচিত ছিল।
চিড়িয়াখানার দর্শনার্থীরা এখনও লিউকের এক সঙ্গী শেরা ও তার শাবকদের দেখতে পারছেন।
Comments