রুশ ভূখণ্ডে মার্কিন অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে পারবে ইউক্রেন

নতুন নীতিমালার ফলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি হামলায় (প্রতিরক্ষা নয়) মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে আর কোনো বাধা থাকছে না। যদিও কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
৪ এপ্রিল এসব অস্ত্র কিয়েভকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: মার্কিন সেনাবাহিনী (সেন্টকম)
৪ এপ্রিল এসব অস্ত্র কিয়েভকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: মার্কিন সেনাবাহিনী (সেন্টকম)

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রায় আড়াই বছর পর এক উল্লেখযোগ্য, নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রুশ ভূখণ্ডে হামলার ক্ষেত্রে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন তিনি।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

নতুন নীতিমালার ফলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি হামলায় (প্রতিরক্ষা নয়) মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে আর কোনো বাধা থাকছে না। যদিও কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন শুরুর প্রথম থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররা কিয়েভকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে এসেছে। তবে শর্ত ছিল একটাই—এই অস্ত্র শুধু প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা যাবে। তবে সাম্প্রতিক সময় সুর পাল্টেছে জেলেনস্কির বেশিরভাগ পশ্চিমা মিত্র।

মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, অনুমতি দেওয়া হলেও শুধু খারকিভ অঞ্চলকে সুরক্ষা দিতে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে 'রুশ ভূখণ্ডে' হামলা চালাতে পারবেন জেলেনস্কি।

দীর্ঘ সময় থেকে এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের চাপে ছিলেন বাইডেন। তবে এ ধরনের উদ্যোগে এই যুদ্ধে সরাসরি 'ন্যাটো' জোট যুক্ত হয়ে পড়তে পারে, বা এমন কী, রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক পেশীশক্তির প্রদর্শনীতেও জড়িয়ে যেতে পারে জোটের সদস্যরা—এমন আশঙ্কায় এতদিন ইউক্রেনের অনুরোধে কান দেননি বাইডেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন ফিলাদেলফিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন ফিলাদেলফিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, 'প্রেসিডেন্ট (বাইডেন) সম্প্রতি তার দলকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করে খারকিভ অঞ্চলে পাল্টা-হামলা চালাতে পারে, তা নিশ্চিত করতে। রুশ বাহিনী (রাশিয়ার) যেসব অবস্থান থেকে হামলা চালাচ্ছে বা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেখানেও হামলা চালাতে পারবে ইউক্রেন।'

নাম না প্রকাশের শর্তে মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, 'রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূর-পাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের নীতির পরিবর্তন হয়নি।'

অপর এক মার্কিন কর্মকর্তা বাইডেনের নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাম্প্রতিক সময় ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের খারকিভ প্রদেশে তীব্র হামলা চালিয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে রাশিয়া। মূলত নতুন এই আগ্রাসন ঠেকাতেই নীতি বদলাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

বেশ কিছুদিন ধরেই অস্ত্র-গোলাবারুদের অভাবে বিপাকে আছে কিয়েভ। এই সুযোগে রাশিয়া তাদের হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল খারকিভ দখলের উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্লেষকরা এমনও বলেছেন যে খারকিভ দখল করতে পারলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন 'যুদ্ধ জয়ের' ঘোষণাও দিতে পারেন।

ছয় সপ্তাহের বিলম্বের পর অবশেষে মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে। তবে সেসব অস্ত্র এখনো কিয়েভে পৌঁছেনি।

সম্প্রতি জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি: রয়টার্স
সম্প্রতি জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি: রয়টার্স

বুধবার মার্কিন নীতি বদলের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অ্যান্টনি ব্লিকেন। তিনি জানান, ওয়াশিংটন 'পরিস্থিতির দাবি মেনে তাদের নীতি বদলাতে যাচ্ছে'।

১০ মে খারকিভে বড় আকারে হামলা শুরুর পর থেকেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হোয়াইট হাউস, মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেন।

১৩ মে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানোর অনুমতি চায় কিয়েভ। ১৫ মে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বিষয়টি বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এতে নীতিগত সমর্থন দেন।

এরপর ১৭ মে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন বাইডেন।

এরপর গত ২ সপ্তাহের মাঝে কোন এক সময় এতে চূড়ান্ত লিখিত অনুমোদন দেন বাইডেন। তবে সঙ্গত কারণে বিষয়টি গোপন রাখা হয়।

নতুন এই নীতি গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট করেছে, শুধু সীমান্তবর্তী রুশ অবস্থানে এবং যেসব জায়গা থেকে তারা হামলা চালাচ্ছে, সেখানে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে।

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডস ও সম্প্রতি জানিয়েছে তাদের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানোর অধিকার রয়েছে কিয়েভের।

Comments

The Daily Star  | English
Increase in remittance Bangladesh FY24

Remittance hit $24b in FY24, highest in three years

After hovering around the $21-billion mark for the previous two fiscal years, total remittances sent home by Bangladesh’s migrant workers reached nearly $24 billion in the just concluded fiscal year of 2023-24, providing some breathing space amid the forex crunch.

14h ago