যে কারণে খেরসন শহর থেকে সেনা সরাচ্ছে রাশিয়া
ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার 'বিশেষ সামরিক অভিযান' শুরু হয়েছিল সীমান্তবর্তী খেরসন শহর দখলের মধ্য দিয়ে। এখন সেই শহর থেকে নিজেদের সেনা সরানোর ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শইগু।
গতকাল বুধবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরটি এ তথ্য জানিয়েছে।
যেসব কারণে ইউক্রেনীয় শহর খেরসন থেকে ক্রেমলিন সেনা সরিয়ে নিচ্ছে তা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ কমান্ডার জেনারেল সেরগেই সুরোভিকিন জানিয়েছেন যে প্রতিপক্ষের সেনারা খেরসন শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সেই শহর থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শইগু।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শহর থেকে সেনা প্রত্যাহারের পাশাপাশি সেই অঞ্চলে নিপার নদীর তীরে নতুন করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে রাশিয়া।
'সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের জীবন রক্ষা'য় খেরসন শহর থেকে সেনা সরানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন এর পেছনের কারণগুলোও তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়—
বেসামরিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করেছে কিয়েভ
ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে খেরসন শহরে নির্বিচারে হামলার অভিযোগ তুলে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিপক্ষের সেনারা শহরের স্কুল ও হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনাগুলোয় আঘাত করছে। রুশ কমান্ডার জেনারেল সেরগেই সুরোভিকিন বলেছেন, 'ক্রমাগত গোলা বর্ষণের কারণে জনজীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।' তিনি জানিয়েছেন, বেসামরিক লোকজন সে পথে যাতায়াত করেন সেখানেও হামলা চালানো হচ্ছে।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা
রুশ কমান্ডার সুরোভিকিন আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা খেরসন শহরের কাছে নিপার নদীর ওপর কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় তা সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইউক্রেনীয়দের হামলায় কেন্দ্রটি ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে আরও হামলা হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ধসে গিয়ে বিস্তৃত এলাকায় বন্যা সৃষ্টি করতে পারে। তেমনটি হলে সেখানকার অধিবাসীসহ রুশ সেনারাও বিপদে পড়বে।
সফল প্রতিরক্ষা ও প্রতিহামলার প্রস্তুতি
রুশ সেনারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খেরসন, দনবাস ও লুহানস্ক প্রদেশ সফলভাবে দখল করে নিলেও এখন তা ধরে রাখতে তাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে ইউক্রেনীয় সেনারা রুশ দখলকৃত প্রদেশগুলোয় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
রুশ কমান্ডারের মতে, ইউক্রেনীয় হামলা থেকে সেনাদের রক্ষা ও প্রতিপক্ষের ওপর সফল প্রতিহামলার জন্য কিছু এলাকা থেকে রুশ সেনাদের কৌশলগত কারণে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
রুশ কমান্ডার সুরোভিকিনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত অক্টোবরেই কিয়েভ ১২ হাজারের বেশি সেনা, ৮০০-র যুদ্ধযান ও অন্তত ১৮ যুদ্ধবিমান হারিয়েছে।
ইউক্রেনের চেয়ে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি '৭ থেকে ৮ গুণ কম' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
Comments