ইয়াহিয়া সিনওয়ারের সুদীর্ঘ কারাজীবন, লেখক ও রাজনৈতিক সত্তা

হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার | ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা সংস্থা বৃহস্পতিবার যৌথভাবে নিশ্চিত করেছে যে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজা উপত্যকায় বুধবার ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। যদিও হামাসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ খবর নিশ্চিত করা হয়নি।

সিনওয়ার ১৯৬২ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে তিনি খান ইউনিস স্কুলে পড়াশোনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আরবি স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১১ সালে তিনি গাজা উপত্যকার এক নারীকে বিয়ে করেন। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৮২ সালে ২০ বছর বয়সে তিনি প্রথম গ্রেপ্তার হন। তাকে চার মাসের প্রশাসনিক আটকাবস্থায় রাখা হয়। মুক্তির পর মাত্র এক সপ্তাহ পরে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিনা বিচারে ছয় মাস কারাগারে রাখা হয়। ১৯৮৫ সালে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন এবং আট মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

১৯৮৮ সালে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয় এবং দুই ইসরায়েলি সৈন্যকে অপহরণ ও হত্যার পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা করার সন্দেহে চার ফিলিস্তিনিকে হত্যার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে তার বিচার করা হয়। এ মামলায় তাকে চার দফা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

কারাবাসের সময় সিনওয়ার ইসরায়েলি কারাগারে হামাস বন্দীদের সুপ্রিম লিডারশিপ কমিটির নেতৃত্ব দেন। একের পর এক অনশন ধর্মঘটের সময় কারা কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষ পরিচালনা করতে সহায়তা করেন। এ সময় তাকে বিভিন্ন কারাগারের স্থানান্তর করা হয়।

সিনওয়ার দুইবার কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু উভয় প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়।

সিনওয়ার তার কারাজীবনকে পড়া-লেখা, হিব্রু শেখা এবং রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বই রচনা ও অনুবাদ করার কাজে ব্যবহার করেন।

তিনি ২০১১ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের এক বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসাবে মুক্তি পান।

মুক্তির পর, ২০১২ সালে আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের সময় সিনওয়ার হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোতে নির্বাচিত হন, যেখানে তিনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালে তিনি হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। রাজনৈতিক ব্যুরো ও ব্রিগেডের নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয় প্রচেষ্টা।

সিনওয়ার ২০১৭ সালে গাজায় আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন এবং ২০২১ সালে তিনি আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে চার বছরের মেয়াদের জন্য পুনর্নির্বাচিত হন।

সিনওয়ারের বাড়িতে একাধিকবার বোমা হামলা হয়েছে। তাকে একজন সতর্ক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। তিনি খুব কমই প্রকাশ্যে কথা বলতেন।

সিনওয়ারকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের আক্রমণের মূল হোতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

তেহরানে এক ইসরাইলি বিমান হামলায় ইসমাইল  হানিয়াহ নিহত হওয়ার পর হামাস আগস্টে  সিনওয়ারকে তার শীর্ষ নেতা নির্বাচন করে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Govt Logo

All 64 DCs protest suggested change to promotion criteria for deputy secy post

The Bangladesh Administrative Service Association (Basa) has also issued a statement protesting the proposal

55m ago