‘লেবাননে যুদ্ধ করতে এলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে’
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের শুরু থেকেই লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। তবে এই সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়ানোর ইচ্ছে নেই সংগঠনটির। তবে সংগঠনের উপ-নেতা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়াতে তারা প্রস্তুত।
গতকাল মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
হিজবুল্লাহর উপ-প্রধান শেখ নাঈম কাশেম জানান, হিজবুল্লাহ 'যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং ইসরায়েলকে বিজয়ী না হতে দিতে বদ্ধপরিকর।'
'লেবাননে যুদ্ধ করতে এলে ইসরায়েলের পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'ইসরায়েল সর্বাত্মক যুদ্ধ করতে চাইলে আমরা তাদের জন্য প্রস্তুত।'
গত আট মাস ধরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে নিয়মিত হামলা-পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সংশ্লিষ্টরা চলমান গাজা সংঘাত লেবাননেও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কার কথা বেশ কয়েকবার বলেছেন।
কাশেম বলেন, লেবানন সব সময়ই গাজার পক্ষে থাকবে।
হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বেশ কয়েকবার বলেছেন, 'গাজার প্রতি হিজবুল্লাহর সমর্থন চূড়ান্ত ও স্থায়ী'।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল সীমান্তে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে হিজবুল্লাহ।
গতকাল মঙ্গলবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।
এই হামলাকে লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার জবাব হিসেবে উল্লেখ করেছে হিজবুল্লাহ।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভি গতকাল জানান, তারা উত্তর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর দৈনিক হামলার বিষয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
হালেভি বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্তের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি এবং আইডিএফ এর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।'
'আমরা আট মাস ধরে হামলার জবাব দিচ্ছি এবং হিজবুল্লাহকে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তারা তাদের শক্তিমত্তা বাড়িয়েছে এবং আমরা অত্যন্ত কার্যকর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমরা এখন উত্তরে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত', যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, '(আমাদের আছে) শক্তিশালী প্রতিরক্ষা, হামলা চালানোর প্রস্তুতি, এবং আমরা সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে', যোগ করেন তিনি।
২০০৬ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়ছে হিজবুল্লাহ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই সংঘাত তীব্র হয়েছে। উভয় দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে হাজারও মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রায় ৩০০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। সঙ্গে নিহত হয়েছেন ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক। লেবাননের ভূখণ্ড থেকে আসা হামলায় ১৮ ইসরায়েলি সেনা ও ১০জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহতের দাবি জানিয়েছে আইডিএফ।
সোমবার হিজবুল্লাহর রকেট হামলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে উত্তর ইসরায়েলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে হিজবুল্লাহর রকেট হামলা ঠেকাতে আইডিএফ তাদের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হিজবুল্লাহর রকেট ধ্বংস করলে সেখান থেকে ছুটে আসা শ্র্যাপনেলের আঘাতে সাফেদ শহরের এক ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনা আহত হয়েছেন।
শ্র্যাপনেলের কারণে সাফেদের বিরিয়া বনে আগুনের সূত্রপাত হয়। দমকল বাহিনীর ১০টি ইউনিট ও অগ্নিনির্বাপক উড়োজাহাজ সম্মিলিতভাবে এই আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
প্রাদেশিক কাউন্সিল জানিয়েছে, এই আগুনে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
Comments