আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের রায় আজ

আইসিজে ভবনের সামনে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স
আইসিজে ভবনের সামনে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জাতিসংঘের শীর্ষ বিচার বিভাগীয় সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) আজ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা অভিযোগের বিপরীতে রায় দেবে।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

তেল আবিবের বিরুদ্ধে প্রিটোরিয়ার অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

আইসিজের প্রতি প্রিটোরিয়ার দাবি, গাজার দক্ষিণের রাফাসহ সকল অঞ্চলে 'অবিলম্বে' ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ ও আরও বড় আকারে মানবিক ত্রাণ প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।

ইসরায়েল এই দাবি নাকচ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের যুক্তি, জোর করে যুদ্ধবিরতি দেওয়া হলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা পুনর্গঠিত হবে। যার ফলে ৭ অক্টোবরের হামলার সময় জিম্মি করে নেওয়া মানুষগুলোকে উদ্ধার করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

জানুয়ারিতে এই আদালত সর্বশেষ ইসরায়েলকে নির্দেশ দেয় এই যুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ করতে। তবে যুদ্ধবিরতির নির্দেশনা দেওয়া থেকে বিরত থাকে আইসিজে।

দক্ষিণ আফ্রিকা যুক্তি দিয়েছে, রাফার সাম্প্রতিক অভিযানগুলো গাজার পরিস্থিতিকে আমূলে বদলে দিয়েছে। যার ফলে আদালতের উচিৎ জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির নির্দেশ দেওয়া।

আইসিজে বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বিমতের বিষয়গুলো নিরসন করে থাকে। এই আদালতের রায় মানার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোনো রাষ্ট্রকে তা বাস্তবায়নে বাধ্য করার সক্ষমতা নেই তাদের। রাশিয়াকে ইউক্রেনে আগ্রাসন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আইসিজে, কিন্তু এখনও তা পালন করেনি ক্রেমলিন।

বিচারকরা দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধের সঙ্গে একমত হতে পারে, তা নাকচ করতে পারে বা পুরোপুরি ভিন্ন কোন নির্দেশও দিতে পারে।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েল ও হামাসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেছেন।

আইসিজে ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত। ছবি: রয়টার্স
আইসিজে ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত। ছবি: রয়টার্স

করিম খানের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সহ হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগের শুনানিতে দেশটির রাষ্ট্রদূত ভুসিমুজি মাদোনসেলা অভিযোগ করেন, 'ইসরায়েলের গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে এবং ভয়াবহতার নতুন মাত্রায় পৌঁছে গেছে।'

'গত কয়েকদিন গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা ও আগ্রাসনের মাত্রা অনেক বেড়েছে। যার ফলে আদালতকে এখুনি ব্যবস্থা নিতে হবে', যোগ করেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার যুক্তি, গাজার ক্ষুধার্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হল যুদ্ধবিরতি চালু করা।

দক্ষিণ আফ্রিকা চায় আদালত জরুরি নির্দেশনা দিয়ে ইসরায়েলকে যুদ্ধ স্থগিত করতে বাধ্য করুক। পাশাপাশি, ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ লঙ্ঘণের মূল অভিযোগের বিষয়ে রায় পরবর্তীতে আসতে পারে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৭০ জন নিহত হন। হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫২ জন। জিম্মিদের মধ্যে ১২৪ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩৭ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।

এই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে সেদিনই গাজার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ও নির্বিচার বিমানহামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরবর্তীতে স্থলবাহিনীও এতে যোগ দেয়। গত ৭ মাসে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩৫ হাজার ৮০০ তে দাঁড়িয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

 

Comments

The Daily Star  | English

Killing of trader in old Dhaka: Protests erupt on campuses

Protests were held on campuses and in some districts last night demanding swift trial and exemplary punishment for those involved in the brutal murder of Lal Chand, alias Sohag, in Old Dhaka’s Mitford area.

4h ago