জেলেনস্কির শান্তির বাণী প্রচার করবে না ফিফা, ইউক্রেনের নিন্দা
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির 'শান্তির বার্তা' প্রচারে অস্বীকার করেছে ফিফা। এই সিদ্ধান্তে নিন্দা জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
গতকাল শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে পাঠানো লিখিত বার্তায় জানানো হয়, ইংরেজিতে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'কাতার এই উদ্যোগে সমর্থন জানালেও ফিফা ফাইনাল খেলার আগে প্রেসিডেন্টের ভিডিও বার্তা দেখানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে।'
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আরও জানায়, ফিফা এটি সম্প্রচার না করলেও তারা স্বাধীনভাবে এই ভিডিও বিতরণ করবে।
কার্যালয় থেকে মত প্রকাশ করা হয়—ফিফার এই সিদ্ধান্তে এটাই প্রকাশ পেয়েছে যে 'সকার (ফুটবলের মার্কিন নাম) যে অর্থ বহন করে, এই সংস্থা তা ভুলে গেছে। এই খেলা বিভেদ সৃষ্টির পরিবর্তে মানুষকে কাছে আনে'।
এ বিষয়ে ফিফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সংস্থাটির মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রথম মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হিসেবে কাতারে আয়োজিত এ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই ফিফা একে 'রাজনৈতিক প্রভাব ও বার্তা' থেকে মুক্ত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের অনুরোধের বিষয়ে কাতার কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।
সিএনএন ভিডিও ক্লিপের অনুলিপি শনিবার হাতে পায়। প্রতিবেদন অনুসারে—ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, ফুটবল সারা বিশ্বকে এক কাতারে নিয়ে আসে।
এ ছাড়াও, জেলেনস্কি সবাইকে 'বিশ্বযুদ্ধের বদলে বিশ্বকাপে' অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ভিডিওতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'বিশ্বকাপ বারবার প্রমাণ করেছে, নানান দেশ ও জাতীয়তার মানুষ রক্তাক্ত যুদ্ধক্ষেত্রে আগুন নিয়ে না খেলে, বরং সবুজ খেলার মাঠে ফেয়ার প্লের মাধ্যমেই খুঁজে বের করতে পারে কারা সবচেয়ে শক্তিশালী।'
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ফিফা এই ভিডিওকে 'অতিমাত্রায় রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত' বার্তা হিসেবে বিবেচনা করেছে। শুক্রবার সুইজারল্যান্ডে ফিফার সদরদপ্তরে ভিডিওর কপি পাঠানো হলে শনিবার এটি না দেখানোর সিদ্ধান্ত আসে।
কার্যালয় থেকে আরও বলা হয়, 'প্রেসিডেন্টের আহ্বানে কোনো রাজনৈতিক বার্তা নেই, যেটি এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে রাজনীতির রঙে রাঙাতে পারে। এখানে কোনো ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ, রাজনৈতিক ইঙ্গিত, এমন কী, কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়য়, 'ফিফার এই ভুল শোধরানোর সময় এখনো আছে। শান্তির প্রচারে যে বৈশ্বিক ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছে, তার মঞ্চে শান্তির বাণী প্রচারে ফিফার ভয় পাওয়া উচিৎ নয়'।
Comments