নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন সংস্কারের জন্য ইউরোপে ৩ দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ: রাশিয়া

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন দিয়ে ২০১১ সাল থেকে রাশিয়া থেকে বাল্টিক সাগর হয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া তাদের গ্যাস রপ্তানির সবচেয়ে বড় পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ১ সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে। ফলে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ আছে।

আজ যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থা গাজপ্রম জানিয়েছে, সংস্কার কাজের জন্য পাইপলাইনটি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ৩ দিন এটি বন্ধ থাকবে।

পাইপলাইন বন্ধ রাখার আরও বেশ কিছুদিন আগে থেকে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়েছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের শাস্তি হিসেবে দেশটি গ্যাসের সরবরাহকে 'অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করছে। 

নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন বাল্টিক সমুদ্রের নিচে দিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার (৭৪৫) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এটি রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গ এলাকা থেকে জার্মানির উত্তর-পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত প্রসারিত।

২০১১ সালে এই পাইপলাইনের উদ্বোধন হয়। এটি রাশিয়া থেকে দিনে ১৭০ ঘন মিটার গ্যাস জার্মানিতে পাঠাতে পারে।

জুলাই মাসেও সংস্কারের কারণ দেখিয়ে ১০ দিন পাইপলাইন বন্ধ রেখেছে রাশিয়া। এরপর থেকে 'ত্রুটিযুক্ত সরঞ্জামের' কথা বলে মাত্র ২০ শতাংশ সক্ষমতায় পাইপলাইনের কার্যক্রম চালিয়েছে রাশিয়া। অবশেষে পুরোপুরি বন্ধ হল এই পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ।

ইউরোপের নেতাদের আশংকা, দীর্ঘ সময় ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলে পুরো মহাদেশে গ্যাসের দাম আরও বেড়ে যাবে, যা ইতোমধ্যে ৪০০ শতাংশ বেড়েছে।

গাজপ্রম ফ্রান্সে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার পর মঙ্গলবার ফরাসি জ্বালানি মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ে রানুশে অভিযোগ করেন, রাশিয়া 'গ্যাসকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।'

ফরাসি জ্বালানি মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ে রানুশে।ছবি: রয়টার্স
ফরাসি জ্বালানি মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ে রানুশে।ছবি: রয়টার্স

তবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ দাবি অস্বীকার করে জানান, পশ্চিমের বিধিনিষেধের কারণে রাশিয়ার অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এ কারণেই গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। 

গত সপ্তাহে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাশিয়া দৈনিক প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে। ফিনল্যান্ডের কাছাকাছি অবস্থিত একটি কারখানায় এই গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। উৎপাদিত গ্যাস সংরক্ষণের কোনো প্রক্রিয়া না থাকায় এটি করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে মত প্রকাশ করা হয়।

 

Comments