যুক্তরাষ্ট্রের আদালত থেকে মুক্তি পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার পথে অ্যাসাঞ্জ

অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ব্যারি পোলাক আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অ্যাসাঞ্জকে কখনোই গুপ্তচরবৃত্তি আইনের আওতায় অভিযুক্ত করা উচিত হয়নি। তিনি এমন কাজ করেছেন, যা সাংবাদিকেরা নিয়মিতই করে থাকেন।’
শুনানি শেষে আদালতের বাইরে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স
শুনানি শেষে আদালতের বাইরে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের আদালত থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তির পর তিনি তার নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আইল্যান্ড অঞ্চলে অবস্থিত সাইপানের একটি আদালত অ্যাসাঞ্জকে মুক্ত ঘোষণা করেন। পরে তিনি ক্যানবেরার উদ্দেশে রওনা দেন।

মুক্তির মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জের ১৪ বছরের আইনি লড়াইয়ের অবসান হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এসব অভিযোগের বিপরীতে শাস্তি বা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়া এড়াতে তিনি সাত বছর লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে ছিলেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে লন্ডন পুলিশ।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে বহনকারী বেসরকারী উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে বহনকারী বেসরকারী উড়োজাহাজ। ছবি: রয়টার্স

পাঁচ বছরের বেশি সময় অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যের কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকেই আইনি লড়াই চালাচ্ছিলেন তিনি। মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে গত সোমবার অ্যাসাঞ্জ মুক্ত পান। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপটিতে যান।

আজ সাইপানের আদালতে তিন ঘণ্টার শুনানিতে অংশ নেন অ্যাসাঞ্জ। সমঝোতা অনুযায়ী, আদালতে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত গোপনীয় নথি ফাঁসের ফৌজদারি অভিযোগ স্বীকার করে নেন।

প্রধান ডিসট্রিক্ট জজ রামনা ভি মাংলনা অ্যাসাঞ্জের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন। ইতিমধ্যে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যে কারাভোগ করে ফেলায় তাঁকে মুক্ত ঘোষণা করেন মার্কিন আদালত।

অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ব্যারি পোলাক আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, অ্যাসাঞ্জকে কখনোই গুপ্তচরবৃত্তি আইনের আওতায় অভিযুক্ত করা উচিত হয়নি। তিনি এমন কাজ করেছেন, যা সাংবাদিকেরা নিয়মিতই করে থাকেন।'

উইকিলিকসের কাজ অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন পোলাক।

শুনানির পর আদালতের বাইরে অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স
শুনানির পর আদালতের বাইরে অ্যাসাঞ্জ। ছবি: রয়টার্স

শুনানি শেষে অ্যাসাঞ্জ (৫২) আদালত থেকে বের হয়ে একটি সাদা রঙের এসইউভি গাড়িতে ওঠেন। আদালতের সামনে অবস্থানকারী সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

এরপর একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে সাইপান থেকে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার উদ্দেশে রওনা দেন অ্যাসাঞ্জ। আজ স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তাঁর অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর কথা।

কৌঁসুলিরা বলেছেন, অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের মুল ভূখণ্ডে যেতে রাজি হননি। পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়া থেকে কাছাকাছি হওয়ায় নর্দার্ন মারিয়ানা আইল্যান্ডসের সাইপান দ্বীপ এলাকার আদালতকে বিচার কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল।

Comments