বেসামরিক মানুষ সুরক্ষিত না থাকলে অস্ত্র সরবরাহ কমতে পারে: নেতানিয়াহুকে বাইডেন

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন—গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ ও বিদেশী ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষিত না রাখলে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলেরে প্রতি সামরিক সমর্থন কমানো হতে পারে।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। বাইডেন ও নেতানিয়াহুর ফোন কলে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থাটি।

গাজায় হামাসকে নির্মূলের জন্য প্রায় ছয় মাস ধরে নির্বিচার ও সর্বাত্মক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। এ পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকবার ইসরায়েলকে সর্বাত্মক হামলার কৌশল থেকে বের হয়ে এসে শুধু হামাসের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালানোর অনুরোধ জানায় ওয়াশিংটন। কিন্তু তা সত্ত্বেও, ইসরায়েল তাদের কৌশল বদলায়নি।

সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমানহামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্টার কিচেন (ডব্লিউসিকে) নামের মানবিক ত্রাণ সংস্থার সাত কর্মী নিহত হলে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় নেমে আসে।

গাজায় ত্রাণের আশায় জমায়েত হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স
গাজায় ত্রাণের আশায় জমায়েত হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েল স্বীকার করেছে, এটি একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল।

হোয়াইট হাউস সুনির্দিষ্ট করে জানায়নি তারা নেতানিয়াহুকে কি কি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে, বা এসব পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে পরিণাম কি হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরোক্ষ হুমকির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র পাঠানোর প্রক্রিয়া ধীর করে দিতে পারে। 

ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির কর্মকর্তা ও অভিজ্ঞ মার্কিন কূটনীতিবিদ ডেনিস রস বলেন, 'কার্যত (মার্কিন) প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এসব মানবিক প্রয়োজন মেটাও, আর না হলে আমি সামরিক সহায়তা কমাতে বাধ্য হব।'

নিজের প্রেসিডেন্ট পদ ধরে রাখতে নভেম্বরে নির্বাচনে লড়বেন বাইডেন। তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিজেকে বলিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরতে হিমশিম খাচ্ছেন বাইডেন। বিশেষত, নেতানিয়াহুর আগ্রাসী নীতির কারণে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের ক্ষুব্ধ করেছে। তারা চাইছেন বাইডেন, নেতানিয়াহুর ওপর চাপ দিক। অপরদিকে, ইসরায়েলের ওপর বেশি চাপ দিলে নিরপেক্ষ ভোটাররা (যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েল সমর্থন করেন) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন—এমন আশংকাতেও আছেন বাইডেন।

বাইডেন ও নেতানিয়াহুর বৈঠক। ফাইল ছবি: রয়টার্স
বাইডেন ও নেতানিয়াহুর বৈঠক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

চলমান সংঘাতে এবারই প্রথম প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েলের প্রতি সামরিক সমর্থন কমানোর হুমকি দিলেন বাইডেন। তিনি জানান, বেসামরিক মানুষ ও ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে বলিষ্ঠ উদ্যোগ না নিলে মার্কিন নীতিমালা বদলাতে পারে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত ও নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৬০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫০ জন মানুষ। জিম্মিদের মধ্যে ১৩০ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজায় প্রায় ছয় মাস ধরে সর্বাত্মক ও নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় নিহত হয়েছেন ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Comments

The Daily Star  | English

Shutdown is another economic peril

Vowing to continue an indefinite work stoppage and stage a protest march on tax offices, the NBR Reform Unity Council has intensified its demands

7h ago