ফিলিস্তিনের সমর্থনে দেশে দেশে বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের সমর্থনে জর্ডানে বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এবং গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশেও ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজন ইসরায়েলের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সমাবেশ করেছেন।

হামাসের হামলার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার এবং অনেক নাগরিক ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানালেও গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা বর্ষণ ও সৃষ্ট মানবিক সংকট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে মানুষের ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন তুরস্কের মানুষ। ছবি: রয়টার্স

তুরস্কে বিক্ষভকারীরা মসজিদের বাইরে জনতা জড়ো হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর দিয়ারবাকিরে ৪৬ বছর বয়সী ব্যবসায়ী মিকাইল বাকান রয়টার্সকে বলেছেন, 'ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমস্ত মুসলিম বিশ্বের এক হওয়া দরকার।'

ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে, ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ইসরায়েলি সেনা সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।

রোমে একটি বিশাল ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করেছেন। ডেনমার্কের ব্রাব্র্যান্ড, জার্মানির বার্লিনসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে বিক্ষভ হয়েছে। সংঘাতের আশঙ্কায় জার্মানি এবং ফ্রান্স ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বলেছে যে তারা সিনাগগ এবং ইহুদি স্কুলগুলোতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় নিহত প্রায় ১৩০০ জনের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় বিমান ও আর্টিলারি হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় এরই মধ্যে দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত প্রধান শহরগুলোতে ইহুদি এবং মুসলমান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি জোরদার করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াশিংটনে, ইসরায়েল এবং আমেরিকান ইহুদি সম্প্রদায়ের সমর্থনে শহরের ফ্রিডম প্লাজায় পুলিশের নিরাপত্তায় প্রায় ২০০ মানুষ বিক্ষোভ করেন।

নিউইয়র্কে টাইম স্কয়ারে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ হয়।

শুক্রবার বাগদাদে তাহরির স্কয়ারে সমাবেশ করে কয়েক হাজার ইরাকি। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেন।

ইরাকের বাগদাদে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে লাখো মানুষের বিক্ষোভ প্রদর্শন। ছবি: রয়টার্স

হামাসের সমর্থনে ইরান জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। লেনাননে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা 'ইসরায়েলের ধ্বংস, ইহুদিবাদের ধ্বংস!' বলে স্লোগান দেন। তাদের অনেকের হাতে ফিলিস্তিন এবং হিজবুল্লাহর পতাকা ছিল।

হিজবুল্লাহর উপপ্রধান নাইম কাসেম লেবাননে একটি বিক্ষোভ সমাবেশে বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা সম্পূর্ণ তৈরি আছে।

ইসরায়েলের সমর্থনেও বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রার্থনা হয়েছে।

ওয়ারশতে, পোল্যান্ডের প্রধান র‍্যাবাই, মাইকেল শুদ্রিচ শান্তির পক্ষে একটি প্রার্থনা সভায় নেতৃত্ব দেওয়ার কথা আছে। ফ্রান্সের ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্যরা সাবাথ উপলক্ষে প্যারিসের বৃহত্তম উপাসনালয়ে জড়ো হবেন।

ইয়েমেনে ফিলিস্তিনের সমর্থনে মিছিল। ছবি: রয়টার্স

বৃহস্পতিবার রাতে প্যারিসে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ফরাসি পুলিশ। সংঘাতের আশঙ্কায় ফ্রান্স সরকার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে।

নিরাপত্তা সংকটের কারণে নেদারল্যান্ডসে ইহুদিদের স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়। একই কারণে লন্ডনেও দুটি ইহুদি স্কুল ছিল।

লন্ডনের রাস্তাতেও টহল বাড়িয়েছে পুলিশ। স্কুল, সিনাগগ ও মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইহুদিবিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ায় তারা এই ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago