সমন্বয়কদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মুক্তি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক হয়রানি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে তারা এই সমাবেশ করেন।
তারা জানান, প্রেসক্লাবের সামনে তাদের এই কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পুলিশ বাধা দেওয়ায় তারা ডিআরইউর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, চলমান কোটা আন্দোলন দমাতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন চেক করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে? রাতের বেলা তারা প্রত্যেক মেসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করছে।
যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি তোলেন সমাবেশকারীরা। সেই সময় নয় দফা দাবি আদায় না হলে রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন তারা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায় বলে সকাল থেকে দেখেছি পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। ছাত্রদের তারা বিভিন্নভাবে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দিচ্ছে। রাতে তারা প্রত্যেক মেসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করছে। তারা মোবাইল চেক করছে। এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে? শিক্ষার্থীদের আটক করছে, গ্রেপ্তার করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যে পর্যন্ত আমাদের নয় দফা দাবি আদায় না হচ্ছে, সেই পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। অবিলম্বে সব রেইড বন্ধ করতে হবে। বিজিবি, সেনাবাহিনী রাজপথ থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ সশস্ত্র বাহিনী নামিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে৷ নির্যাতনের শিকার হয়ে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ চোখ হারিয়েছে, পঙ্গুত্ববরণ করেছে, অনেকের মৃত্যু হয়েছে৷ কোনো সংবাদ আমরা দেখতে পারিনি৷ কারণ ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে৷ এটা সমাজের ওপর ফ্যাসিস্ট আক্রমণ৷ এর প্রতিবাদে আমরা আমাদের নয় দফা দাবি জানিয়েছি এবং সেই দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে সরব না৷ মানুষ হত্যার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বাহিনী জড়িত রয়েছে৷ তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে৷ আর গুলি চালানোর নির্দেশদাতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ দায়ী ব্যক্তিদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছি৷ আজকের এ প্রতিবাদী সমাবেশে দাঁড়াতে আমারা অনেক বাঁধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি৷ চারপাশে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘিরে রেখেছে৷ এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যে, আমরা নিজেদের বাসা-বাড়িতেও অনিরাপদ৷ কারণ বাসা-বাড়িতে গিয়ে গিয়ে পুলিশ রেইড দিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আটক করছে৷
সরকারের উদ্দেশে এ শিক্ষার্থী বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দায়ী পুলিশের বিচার করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কারীদের আটকে রেখে জোরপূর্বক আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে যে নাটক সাজানো হলো, তা ছাত্র সমাজ বুঝে গেছে৷
Comments