নাহিদের মুকুটে আরেকটি পালক

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ইতিহাস সৃষ্টি করেন ২৬ বছর বয়সী দুই তরুণ। তারা শপথ নেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে। দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী—নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্যাবিনেট সদস্য হওয়া সবচেয়ে কমবয়সী ব্যক্তি তারাই।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আইকনিক চরিত্র নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা আজ নতুন মোড় নিচ্ছে, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব বিকাশে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে।

২৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করা সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আজ শুক্রবার জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে নানা মতবিরোধ থাকলেও প্রায় সর্বসম্মতভাবে নাহিদ এই দলের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে কমবয়সী প্রধান এখন নাহিদ।

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, জাতীয় পার্টি, ন্যাপ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নাহিদের মতো এত কম বয়সে আর কেউ এত বড় দায়িত্ব গ্রহণ করেননি।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক কমিটি গঠিত হয়, যেখানে ৪১ বছর বয়সী খোকা রায় সম্পাদক নির্বাচিত হন।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ'র সভাপতি হন ১৯৪৯ সালে ৬৯ বছর বয়সে। ৭৭ বছর বয়সে তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে 'ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)' গঠন করেন।

১৯৭২ সালের অক্টোবরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনের সময় এর যুগ্ম আহ্বায়ক আ স ম আব্দুর রব ছিলেন ২৭ বছর বয়সী এবং এম এ জলিল ছিলেন ৩০ বছর বয়সী।

১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে জিয়াউর রহমান যখন বিএনপির আহ্বায়ক হন, তখন তার বয়স ছিল ৪২ বছর।

১৯৮৬ সালের জানুয়ারিতে ৫৬ বছর বয়সে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন।

ড. কামাল হোসেন গণফোরামের প্রধান হন ১৯৯৩ সালে, ৫৫ বছর বয়সে।

২০২১ সালের অক্টোবরে 'বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ' গঠিত হয়। সেইসময় দলটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব নেওয়া নুরুল হক নুরের বয়স ছিল ২৭ বছর ৮ মাস।

সার্বিকভাবে এত কম বয়সে এমন দায়িত্ব নেওয়ায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ব্যতিক্রমী নেতায় পরিণত হতে যাচ্ছেন নাহিদ।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন নাহিদ। এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়, যার ফলে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয় এবং হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন নাহিদসহ ছয়জন সমন্বয়ককে আটক করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এর আগে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগঠন 'ছাত্র অধিকার পরিষদ' থেকে বেরিয়ে 'গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি' গঠন করেন এবং এর সদস্য সচিব ছিলেন।

নাহিদ ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Doubts growing about interim govt’s capability to govern: Tarique

"If we observe recent developments, doubts are gradually growing among various sections of people and professionals for various reasons about the interim government's ability to carry out its duties."

2h ago