গত ৫৪ বছর এক ব্যক্তির পূজা করা হয়েছে: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে বাংলাদেশের অন্যতম স্থপতি, বালাদেশের অন্যতম ফাউন্ডিং ফাদার্স মনে করি। বাংলাদেশে কোনো একজন জাতির পিতা নয়, বাংলাদেশে অনেকজন জাতির পিতা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম মওলানা ভাসানী।
'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা শহরে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, 'আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে মওলানা ভাসানীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাই। আপনারা জানেন, মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে স্মরণ করা হয় না। শেরে বাংলা ফজলুল হক, মওলানা ভাসানীর মতো মহান রাজনৈতিক পুরুষ যারা এই বাংলাদেশের স্থপতি, তাদের বাদ দিয়ে এই বাংলাদেশের জাতির পিতা শুধু একজনকে ঘোষণা করা হয়েছে। একজন ব্যক্তিকে পূজা করা হয়েছে গত ৫৪ বছর ধরে। যে ৬৯ এর গণ অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নিয়েছে, সেই গণঅভ্যূত্থানের অন্যতম কারিগর ছিলেন, নেপথ্যের পুরুষ ছিলেন মওলানা ভাসানী।'
তিনি বলেন, 'মওলানা ভাসানী কৃষকদের জন্য লড়াই করেছিলেন, শ্রমিকদের জন্য লড়াই করেছিলেন, গণমানুষের জন্য লড়াই করেছিলেন। আমরা মওলানা ভাসানীর সেই আদর্শকে ধারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই।'
নাহিদ আরও বলেন, 'মওলানা ভাসানী একজন রাজনৈতিক পুরুষ যিনি স্বাধীনতার পর বলেছিলেন, আমরা পিন্ডির জিঞ্জির ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়, দিল্লির গোলামী করার জন্য নয়। তিনি একাধারে বৃটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলে, পিন্ডির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। মওলানা ভাসানী আমাদের ফারাক্কা লংমার্চে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আমাদের যে নদীর অধিকার, আমাদের যে পানির অধিকার জন্য আমদের যে লড়াই করতে হবে, সেই লড়াইয়ের সূচনা করেছিলেন মওলানা ভাসানী।'
তিনি বলেন, 'মওলানা ভাসানী শুধু রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক দার্শনিক। তিনি দায়িত্বের রাজনীতির কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের প্রাণ, প্রকৃতি এবং সমাজের দায়িত্ব নিতে হবে এবং আমদের আশেপাশের মানুষের দায়িত্ব নিতে হবে। সেই দায়িত্বের ভিত্তিতেই নতুন সমাজ ও নতুন দেশ গড়তে হবে। সেই নতুন বাংলাদেশের কথাই জাতীয় নাগরিক পার্টি বলে যাচ্ছে।'
'টাঙ্গাইল কৃষক আন্দালনের সূতিকাগার' উল্লেখ করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, 'টাঙ্গাইলে কৃষকরা সংগঠিত হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশে কোনো শক্তিশালী কৃষক সংগঠন নাই। ফলে কৃষকদের কথা বলার কোনো কার্যক্রম নাই। কৃষকরা তাদের ন্যয্য অধিকার পায় না। বীজ, সারের দাম বেড়েছে, সরকারের থেকে ভর্তুকি পাওয়া যায় না।' 'কৃষকরা যখন বিক্রি করতে যায় তখন মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে তারা ন্যয্য মূল্য পায় না। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে কৃষকদের ন্যয্য অধিকারটা আমরা আদায় করতে পারব,' বলেন তিনি।
Comments