শ্যামনগরে বিএনপির দুপক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ১৪৪ ধারা
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একই স্থানে বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ইসমাইলপুর এলাকায় ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানিয়েছে, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান কবীরের নেতৃত্বে এদিন বিকেল ৪টায় এম. এম প্লাজার পাশে কৃষক দলের কার্যালয়ের সামনে থেকে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করার কথা ছিল। উপজেলা কমিটির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পৌর বিএনপির এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এই কর্মসূচির ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় শ্যামনগর থানাকেও অবহিত করা হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও নবগঠিত কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ ঘোষণা দেন, একই সময়ে একই স্থানে তারা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণ করবেন। এই ঘোষণা আসার পরপরই উভয়পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়, জানায় সূত্র।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। সূত্র জানিয়েছে, কমিটি নিয়ে শুরু হওয়া বিরোধের জের ধরেই আজ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
এদিন বিকেলে শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পৌর এলাকায় সভা, সমাবেশ ও মিছিল করা যাবে না।
তবে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই মিছিল করেন উপজেলা বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।
আব্দুল ওয়াহেদ অভিযোগ করেন, 'বিকেল ৫টার দিকে সোলায়মানের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বংশীপুরের দিকে যাওয়ার সময় ইসমাইলপুর এলাকায় তার পক্ষের নেতা ও নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আশেক-ই-এলাহির বাড়িতে ইটপাটলেক নিক্ষেপ করা হয়। এতে আশেক-ই-এলাহীর ১০ বছর বয়সী ছেলে আলীপসহ কয়েকজন আহত হন।'
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সোলায়মান বলেন, প্রশাসনের অনুরোধেই তারা হায়বাদ এলাকা থেকে বংশীপুর ফিরে যাচ্ছিলেন। সে সময় আশেক-ই-এলাহীর বাড়ির ভেতর থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এতে তাদের ছয়জন আহত হন।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেখার আলী ও সদস্য সচিব আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা বিএনপির ৪৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ও ৩১ সদস্যের শ্যামনগর পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে সোলায়মান কবীরকে আহ্বায়ক ও গোলাম আলমগীরকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। জি. এম লিয়াকত আলী জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আবু সাঈদ, আশেক-ই-এলাহী, অ্যাড. ইব্রাহিম খলিল, জি. এম. আব্দুল ওহাব, আবুল খায়ের মল্লিক, মো. হাফিজুর রহমান, আব্দুর রশিদ ঢালী ও ফিরোজ হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।
অন্যদিকে শেখ লিয়াকত আলীকে শ্যামনগর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও শামছুজ্জোহাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন সামিউল আজম মনির এবং যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে শেখ আব্দুল হামিদ, জহুরুল হক আপ্পু, আবু হানিফ, আদম আলী খান, আব্দুর রউফ, নজরুল ইসলাম ও আবু তালেবকে।
সূত্র জানিয়েছে, কমিটি ঘোষণার পরপরই কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে এবং কেউ কেউ বলেছেন তারা প্রত্যাশিত পদ পাননি।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়ায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
মোছা. রনী খাতুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।
Comments