চক্রান্তের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে বললেন ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পট পরিবর্তন হলেও বিপদ এখনো পুরোপুরি কেটে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন, সতর্ক থাকবেন। বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নতুন করে বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে। গণতন্ত্রকে আবার আঘাত ও নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে।' 

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'নির্বাচিত সরকারই সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সরকার। কারণ, সেই সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে আসে এবং জনগণের জন্য কাজ করে।'

তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনের কথা আমরা কেন বারবার বলি? নির্বাচন হচ্ছে একটি দরজা, যে দরজা আমাদের গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যায়।'

নেতাকর্মীদের আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আপনারা সবাই সজাগ-সতর্ক থাকবেন। দলকে আরও দৃঢ় করেন। বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নতুন করে বিপদ আসতে পারে। গণতন্ত্রকে আঘাত করার, নষ্ট করার চক্রান্ত আবার চলছে।'

ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বরের বিদ্রোহ-বিপ্লব জাতিকে নতুন করে জাতিসত্তাকে চিনতে শিখিয়েছিল, নতুন করে দেশকে নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। বিপ্লবের নায়ক ছিলেন সিপাহি ও সাধারণ জনগণ। তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দায়িত্ব না নিলে দেশের ইতিহাস কী হতো বলা যায় না। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব পুরো বিভক্ত জাতিকে তখন ঐক্যবদ্ধ করেছিল। মানুষ নতুন আশার আলো, নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রতিটি জায়গায় দুর্নীতি বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। ব্যাংক লুট হয়েছে। সেই ভয়াবহ অবস্থা থেকে ছাত্র-জনতার দৃঢ়তায় অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছি।'

ফখরুল বলেন, 'সবাই মিলে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছি। তাদের এই আশায় দায়িত্ব দিয়েছি, তারা শিগগিরই যে সংস্কারগুলো করা দরকার অর্থাৎ হাসিনা যেগুলো ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, যে জঞ্জাল তৈরি করে দিয়ে গেছে, সেগুলোকে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেবেন।'

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গুমের শিকার বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদি। তিনি বলেন, '১৭ বছর ধরে এই প্রজন্মকে, আমাদের সন্তাদের ভুল ইতিহাস শেখানো হয়েছে। এই সময়ে স্কুল-কলেজে যারা পড়েছে, তারা ৭ নভেম্বরের সিপাহি-জনতার বিপ্লবের ইতিহাস জানে না। আমাদের দায়িত্ব নিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে সেই ইতিহাস শেখাতে হবে।'

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, 'জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে তরুণদের অনুপ্রেরণা ছিলেন তারেক রহমান। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অন্তত হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করা গেছে। আমরা হাসিনামুক্ত হতে পেরেছি। ভবিষ্যতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh foreign policy

Assad’s ouster and the ever-changing world for Bangladesh

Do we have the expertise to tackle the crises and exploit the opportunities in the evolving geopolitical scenario?

12h ago