শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গিয়ে ষড়যন্ত্র করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব গুম-খুনের বিচার করতে হবে। পুলিশ জড়িত থাকলে তাদেরও বিচার করতে হবে।
আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া মাদরাসা মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ) হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তারা পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো রয়ে গেছে। আমরা পরিষ্কারভাবে দাবি জানিয়েছি, যেসব পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। হাসিনার বিচার করতে হবে।'
'হাসিনা ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে' মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'খুব বড় গলায় বলতেন, আমি পালাব না। আমি শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে, কোনোদিন পালাই না। কিন্তু আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন।'
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'হাসিনার বিচার করতে হবে। হাসিনার মন্ত্রীসভার সদস্যদের লুটপাট ও খুনের বিচার করতে হবে। বিচার শুরু হয়েছে। আল্লাহ করে দিয়েছেন। আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর। ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। তারা আজ নিজেরাই পালিয়েছে আর দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।'
দুপুর দুইটার দিকে মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন মির্জা ফখরুল। তিনি নিহত সাঈদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। যে ইতিহাস তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। ফ্যাসিবাদী, খুনি সরকারের পতনের দাবিতে শতশত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। লাখো মানুষ যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল তখন হাসিনা ভয়ে পালিয়ে গেলেন।'
'শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সম্প্রীতির সমাবেশ করছি। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একসঙ্গে নতুন স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে সম্প্রীতির সমাবেশ করছি,' বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'হাসিনার বিচার দাবিতে সব রাজনৈতিক দল আজ সমাবেশ করছে। হাসিনা শতশত মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে হাসিনা একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল।'
আবু সাঈদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আবু সাঈদ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করেছি। আজ তারা বাকরুদ্ধ। কথা বলতে পারছেন না। অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে। আবু সাঈদের মতো যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ সফল করতে আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
Comments