শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ আগামী বছর চালু হবে: কাদের

শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম আগামী বছরের ১ জুলাই চালু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার দুপুরে ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

কাদের বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে ভাষণে সবার জন্য পেনশন স্কিমের যে ডেটটা বলেছেন, শিক্ষকদের ব্যাপারে যে তথ্যটা গেছে এটা মিসটেক। এটাই সত্যি, সবাইকে পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার তারিখ হচ্ছে ২০২৫ সালের ১ জুলাই। এটা তাদেরকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি।

'এছাড়া, শিক্ষকদের দাবি সুপার গ্রেড ও স্বতন্ত্র উচ্চগত স্কেল প্রদানের বিষয়টি আলোচনা হবে। আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকদের মর্যাদা, আর্থিক সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টি আলোচনা করে তারা লিখিত যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে; প্রধানমন্ত্রী কাছে আমরা উত্থাপন করব,' বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'পরবর্তী সিদ্ধান্ত আমরা আলাপ-আলোচনা করে নেব। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আশা করি, সব সমস্যার অচিরেই সমাধান হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছি। শিক্ষক নেতারা সাংগঠনিকভাবে তাদের ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।'

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'গত কয়েক বছরে কোটা না থাকার ফলে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হাতাশাজনকভাবে কমে গেছে। কোটা না থাকায় পুলিশের চাকরিতে মাত্র চারজন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছেন, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছেন দুজন নারী। দেশের ৫০টি জেলায় নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পাননি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পাননি।'

তিনি বলেন, 'বিসিএসগুলোতে বিগত বছরে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ প্রায় ৭০ শতাংশের মতো। ৩৩তম, ৩৫তম ও ৩৬তম বিসিএসে গড়ে প্রায় ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে কোটা থেকে নিয়োগ পেয়েছে মাত্র ২৮ শতাংশ। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংরক্ষিত কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে প্রার্থী অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, সেখানে এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করার যৌক্তিকতা নেই।'

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বর্তমানে ভারতে ৬০ শতাংশ কোটা ও ৪০ শতাংশ মেধা, পাকিস্তানে ৯২ দশমিক পাঁচ শতাংশ কোটাও মাত্র সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মেধা, নেপালে ৪৫ শতাংশ কোটা ও ৫৫ শতাংশ মেধা, শ্রীলঙ্কায় ৫০ শতাংশ কোটা ও ৫০ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং বাংলাদেশে বিদ্যমান পদ্ধতিতে এটা যৌক্তিক।'

তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে। এই অশুভ শক্তি এর আগেও...আমাদের কাছে তথ্য; সবার কাছেই আছে—২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়। তখন রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ এই অশুভ শক্তি কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছিল এবং সড়কের যে আন্দোলন হয়েছিল, ওই আন্দোলনের ওপরও ভর করে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল।

'ওই মহলটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং এ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের প্রতি শিক্ষার্থীদের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির ক্ষেত্র প্রস্তুতের পাঁয়তারা করেছিল,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Trump says Iran has 'maximum' two weeks, dismisses Europe peace efforts

Israel's war with Iran entered its second week on Friday with the Israeli military chief warning of a "prolonged campaign"

24m ago