আমাদের সময় বাজেটের আগে ঝুলি নিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে ভিক্ষা চায়নি: কাদের

আমাদের সময় বাজেটের আগে ঝুলি নিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে ভিক্ষা চায়নি: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

অর্থনেতিক সংকটকালে এই বাজেট পরিমিত, বাস্তবসম্মত, গণমুখী ও সাহসী উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের সময় বাজেটের আগে ঝুলি নিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে ভিক্ষা চায়নি।

আজ শনিবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, 'অর্থনেতিক-সামাজিক অগ্রগতির ফলে জীবনমান এ দেশে দিন দিন উন্নততর হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন শুধু ডালে ভাতের নয়, পুষ্টি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ।'

তিনি বলেন, 'এ সময় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড়ে ছয় দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল আমাদের সবার মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য কমেছে।

'২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশের ৪০ শতাংশের বেশি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে রেখে গিয়েছিল, জনগণের ধারাবাহিক সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য ১৮ দশমিক সাত শতাংশে এবং অতি দরিদ্রের হার পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশে নামিয়ে এনেছে,' বলেন কাদের।

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো নয় শতাংশের উপরে রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি, ডলার বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া আমাদের বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণ। একই সময়ে দেশে গড় মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে সাত শতাংশের বেশি এবং মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে দুই শতাংশের একটি ফারাক রয়েছে।

'ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। এতে আমদানি কমেছে বছরে ১৫ শতাংশের বেশি হারে। ফলে সংকটকালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড; তিন মাসের বেশি আমদানির জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও টাকার মান ধরে রাখতে রিজার্ভ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে। ফলে রিজার্ভ কমে গেছে,' বলেন তিনি।

কাদের বলেন, '২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখনো আমরা ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থনীতি পেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনার দক্ষতার গুণে পূর্ববর্তী দুই বছরের মধ্যে আমরা সেই মূল্যস্ফীতি দমন করে জাতিকে স্থিতিশীল অর্থনীতি উপহার দিয়েছিলাম।

'বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অংশের সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এবার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ। এই বাজেটে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত, সামাজিক নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যা দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবে,' যোগ করেন তিনি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, '১৫ বছর আগের বাংলাদেশ ও ১৫ বছরের পরে উন্নয়নে অর্জনে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। এই বাজেট এবার গতবারের কিছু বেশি। সেটা আমরা বলেছি কী কারণে। বিএনপি আজকে বড় বড় কথা বলে। অর্থ পাচারের কথা বলে, কালো টাকার কথা বলে, দেশকে গিলে খাওয়ার কথা বলে।

'তাদের বাজেট সর্বশেষ ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা। তারপরও বাজেটের আগে সাইফুর রহমানকে বিশ্বের অর্থনীতির বিভিন্ন ফোরামে প্যারিসের কনসোরডিয়াম ফোরামে দৌড়াতে হয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। আমাদের সময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাজেট পূর্ববর্তী সময়ে কোনো অর্থমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে ভিক্ষা চায়নি,' যোগ করেন তিনি।

কাদের বলেন, 'তাহলে বুঝতে পারে, দেশটা কোথায় থেকে কোথায় এসেছে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় আমরা অর্থনীতির মূল ধারায় আনার ব্যবস্থা করেছি। এর ফলে ব্যাংকিং সিস্টেমে অর্থপ্রবাহ বাড়বে।'

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে অন্যায়-অবৈধ কাজে শাস্তি মওকুফের সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, 'ফৌজদারি অপরাধে শাস্তির বিধান প্রচলিত আইনেই সম্ভব।'

'সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কী বললো, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ওরা সবাই বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলে। কথার সঙ্গে যাদের বাস্তব কর্মকাণ্ডে কোনো মিল নেই,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

5h ago