গণবিরোধী বলবো না, এ বাজেট দেশবিরোধী: ফখরুল

বাজেটকে দেশবিরোধী বললেন মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

প্রস্তাবিত বাজেট দেশবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

এই বাজেটকে আপনারা কীভাবে দেখছেন এবং এখানে মানুষের জন্য কী দেখতে পাচ্ছেন এই সংকটকালে—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, 'এটা লুটেরাদের দেশে পরিণত হয়েছে। সরকার লুটেরাতে পরিণত হয়েছে। লুটেরাদের বাজেট হবে কী জন্য? লুট করার জন্য।'

তিনি বলেন, 'এটাই আমি দেখতে পাচ্ছি, আবার একটা নতুন করে লুট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থাৎ তথাকথিত বাজেটে আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি। যেসব জায়গায় আয়ের অংশ দেখানো হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের ওপর সব বোঝা পড়ে যাচ্ছে এবং ব্যয় মেটানোর জন্য তারা যেটা করবে, সেটাও সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে পড়বে।'

ফখরুল বলেন, 'অনুদান অথবা ঋণ আনছে বিদেশে থেকে, সেই সঙ্গে আবার ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেওয়া হবে। সবটাই গিয়ে পড়ছে মানুষের ওপর। মানুষ এই বোঝা টানতে টানতে আর পারছে না। মূল্যস্ফীতি চরম উপরে উঠে গেছে। খাদ্য দ্রব্যের মূল্য যে বৃদ্ধি পেয়েছে, এটা সহনীয় পর্যায়ে নেই। কয়েক দিন আগেই পেট্রল-ডিজেল, বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেল, এখন বাজেটের সঙ্গে সঙ্গে আবার বাড়বে।

'আইএমএফের সঙ্গে যে চুক্তি, প্রতি বছর চারবার বাড়বে। আমরা এই পয়সাটা কী জন্য দিচ্ছি? বিদ্যুৎ খাতে যে চুরি হয়েছে, সেটা সবাই জানে। কুইক রেন্টাল থেকে শুরু করে আদানির কাছ থেকে, ভারত থেকে সবগুলো পকেট ভারী করেছে। কোথায় রূপপুর প্ল্যান্ট? এখন তো আর রূপপুর প্ল্যান্ট একটুও এগোচ্ছে না। কোথায় গেল পায়রা বন্দরের কাজ? ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে—খুব ভালো কথা। কিন্তু কোন পথে আপনি সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান করছেন? মানুষ তো আর পারছে না, বহু মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। কারণ ঢাকা শহরে আর তারা টিকতে পারছে না,' বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'এই বাজেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা, এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মতো কিছু নেই। পুরো বাজেট মেগা প্রজেক্ট, মেগা চুরি ও মেগা দুর্নীতির জন্য করা হয়েছে। এই বাজেটকে তথাকথিত গণবিরোধী বলবো না, এটা বাংলাদেশবিরোধী বাজেট।'

এই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, আর বৈধ উপার্জনের ওপর ৩০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে—এ ব্যাপারে মত জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, 'এখানে যারা ন্যায়ের পথে চলে, তাদের ওপর সমস্ত চাপটা পড়ে যাচ্ছে। যারা অন্যায় করে তাদের ওপর এখানে কিছু হয় না।'

তিনি বলেন, 'কী করে একজন সরকারি কর্মকর্তা হাজার হাজার কোটি টাকা সম্পদ তৈরি করে? কী করে সেনা বাহিনীর একজন সাবেক প্রধান এত সম্পদ তৈরি করতে পারে? এই যে মালয়েশিয়ায় কর্মীরা যেতে পারল না, কেন পারলো না? সরকারের ব্যর্থতার জন্য। প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা।'

Comments