বিএনপি নেতা নির্বাচন করার কলিজাটা কোথায় পায়: সেলিম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, 'বিএনপি নেতা বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে এই এলাকা থেকে নির্বাচন করার কলিজাটা কোথায় পায়? কোথায় আমার আওয়ামী লীগের কর্মীরা? হাতে কি চুড়ি পরেছেন?'
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুরান বন্দর এলাকায় এক অনুষ্ঠানে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি এসব কথা বলেন। সেলিম ওসমানের বড়ভাই নাসিম ওসমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল।
আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মাকসুদ হোসেনকে ইঙ্গিত করে সেলিম ওসমান বলেন, 'একজন রাজাকার সন্তান, জমি দখলকারী। তার পোস্টার কী করে এলাকায় লাগে? শত শত গাড়ি বের করে; মানুষ অবজেকশন দিলে উনি বলেন, 'সরি' আর নির্বাচন কমিশন উনাকে ছেড়ে দেন। প্রশাসনের লোকজন ঘুমায়ে গেলে হবে না, এগুলা দেখতে হবে।'
বন্দর উপজেলা নির্বাচনে ওসমান পরিবারের পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশীদ। তিনি গতবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
উপজেলা নির্বাচনে পছন্দের তিন প্রার্থীর নাম উল্লেখ করে এই সংসদ সদস্য বলেন, 'আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমার সহকর্মী রশীদ ভাই (চেয়ারম্যান প্রার্থী) একজন মুক্তিযোদ্ধা। নাসিম ওসমান একজন মুক্তিযোদ্ধা, নাসিম ওসমানের সহকর্মী সানাউল্লাহ সানু (ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী)। আমাদের ছোট শান্তা আমাদের মেয়ের মতো। এইখানে চারজন ইউপি চেয়ারম্যান আছেন, একজন মুখ খুলে বললেন কিন্তু অন্যরা বললেন না। কিন্তু ওনারা প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন, এই চার ইউনিয়ন থেকে সমস্ত ভোট স্বাধীনতার পক্ষে যাবে।'
নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার আরেক ছোটভাই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানও।
তিনি বলেন, 'এইখানে এসে শুনলাম, কেউ কেউ এমন এমন বক্তব্য দিচ্ছেন আর এমন এমন কথা বলছেন, ওই কথাগুলো যদি আমলে নেই তাহলে আগামীকাল থেকে কেউ মাঠে নামতে পারবেন না। আমি সেলিম ওসমান না, আমরা জানি কী করতে হবে। আমরা চাই সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হোক। যার কপালে লেখা আছে সে পাশ করবে। কিন্তু কথাবার্তা সীমানার মধ্যে রাখেন।'
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'তোমরা আছো, আগামীকাল থেকে বন্দরে যেন কেউ অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে। এইটা দেখা আপনাদের দায়িত্ব। কেউ মহড়া দেখাবেন না। আমরা যেমন ক্ষমতাসীন পার্টি হয়ে ক্ষমতা দেখাই না, তেমনি কেউ মহড়া দেখাইবেন না। আমরা ক্ষমতা দেখালে কেউ নির্বাচন করতে পারতেন না।'
'কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। ওই কথাগুলো শোনার পরে যদি আজকে আমার ভাইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী না হতো তাহলে আমি একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে যাইতাম। কিন্তু সেই কাজটি আমি করব না, কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। মুখের বুলি আর বন্দুকের গুলি একবার বের হয়ে গেলে ফেরত যায় না, কথা বলার সময় এইটা মাথায় রেখে কথা বলবেন। আর এইটাই শেষ না, সামনে আরও সময় আছে। মিলেমিশে ছিলেন মিলেমিশে থাকেন', যোগ করেন শামীম ওসমান।
দুই ভাইয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে কোনো কথা বলিনি। এইটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আর সেলিম ওসমান আমার বড় ভাইয়ের মতো, উনি দুই-একটা কথা বলতে পারেন। এইসব নিয়ে কিছু বলব না। তবে, আমি মনে করি, এই ধরনের কথা ভোটারদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।'
মন্তব্য জানতে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Comments