‘তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ’ বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে শাহজাহান ওমর
বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর নাশকতা মামলায় গত ২৯ নভেম্বর জামিন পেয়ে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র তোলেন। পরে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
আজ বুধবার তিনি বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তোপের মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তিনি যান ডিবি কার্যালয়ে।
ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমর।
তিনি জানান, সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে ডিবি কার্যালয়ে গেছেন প্রতিকার পেতে।
শাহজাহান ওমর বলেন, 'আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একজন প্রার্থী। বিভিন্নভাবে আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। মানুষজন অকথ্য ভাষায় কথা বলে। অনেক সময় আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের ফোনে এমনকি আমার জুনিয়রসহ বন্ধুবান্ধবদের ফোনে ফোন করে মানুষজন আজেবাজে কথা বলে। আবার আমি যদি কলব্যাক করি, তাহলে কেটে দেয়। এগুলো ডিবির হারুন সাহেবকে জানাতে আসলাম। আমি তাকে বললাম যে আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার।'
আজ সুপ্রিম কোর্টে কী হয়েছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি যখন কোর্টের রুম থেকে গাড়িতে উঠি, তখন ১০-১২ জন উকিল আমাকে পেছন থেকে কিছু বলেছে।'
ঝালকাঠিতে তার সভায় অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, 'এটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমি যেহেতু অনেকদিন পর এলাকায় গেলাম, যেহেতু আমি বিএনপি করতাম, তাই বিএনপির অনেক লোক আমার সাথে ছিল। আমরা ওখানে সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি। সেখানে আমার লাইসেন্স করা বন্দুক আমার সঙ্গে ছিল। এটা একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে।'
তিনি বলেন, 'এটা তেমন কোনো ফর্মাল সভা ছিল না। আমি শুধু বলেছি, আমি আগে বিএনপি করতাম, বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হয়েছি। এখন আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার অনুসারে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। আপনারা আমাকে কনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। আমার বিএনপির অনুসারীরাও আপনাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করল। সাবেক বিএনপি ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সবই আমরা একই দল। আগামী নির্বাচনে সবাই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করব।'
নাশকতা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান ওমর বলেন, 'একটা মামলা তো হতেই পারে। ২৮ তারিখে বিএনপির সমাবেশের স্টেজে তো আমি ছিলাম, এটা তো অস্বীকার করতে পারব না। আমার জামিন এমনিতেও হতো। আমি গ্রেপ্তার হলাম ৪ নভেম্বর। ৬ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে আমি আগাম জামিনের আবেদন করি। এই জামিনের একটা নিয়ম হলো আদালতে উপস্থিত থাকা। নিতাই রায়, জয়নাল আবেদিন, মাহবুবউদ্দিন খোকনের জামিন হলো। তাদের ৩ সপ্তাহের জামিন হলো। আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি, আমার জামিন হলো না। পরে আমার যেদিন তারিখ ছিল, সেদিন গেলাম। আমি বললাম আইনজীবী হিসেবে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং রেফারেন্স আছে তিন জনের জামিনের, কেন আমাকে জামিন দেবেন না। আমার আইনজীবী ছিলেন মাসুদ তালুকদার। তিনি বিএনপি করেন।'
বিএনপির সঙ্গে বেইমানি করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আজ যার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, কাল তার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নাও থাকতে পারে। আমি এক রাজনৈতিক দল থেকে অন্য দলে গেলাম। এতে কি বেইমানি হয়ে গেল। বেইমানি তো ধর্মের বিষয়।'
আবার বিএনপিতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলে ওঠেন, 'তওবা, আস্তাগফিরুল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ। এটা কেমন কথা বলেন।'
Comments