বগুড়া

র‍্যাবের গাড়ি দেখে পালানোর সময় যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ

মো. ফোরকান আলী। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার শাজাহানপুরে র‍্যাবের গাড়ি দেখে দৌড়ে পালানোর সময় এক যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, র‍্যাব তাদের ধাওয়া করেছিল। এ সময় পালাতে গিয়ে ওই যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

মারা যাওয়া যুবদল নেতা মো. ফোরকান আলী (৪২) শাজাহানপুরের ঘাষিড়া সুফিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শাজাহানপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সাজাপুর ফটকি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বিএনপি নেতাকর্মীরা।

শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক শাহীন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'অবরোধ সফল করতে ফটকি ব্রিজ এলাকায় আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষে ফিরে যাওয়ার সময় র‍্যাব আমাদের ওপর হামলা চালায়। নেতাকর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফোরকান পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'

সকালে ফোরকানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান বগুড়া-৭ (শাজাহানপুর এবং গাবতলী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন ফোরকান।'

তিনি বলেন, 'এটা তো সবাই জানে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে ফোরকান মারা গেছেন। যারা ফোরকানের সঙ্গে ছিলেন তাদের কাছ থেকে শুনেই তো আমরা তার বাড়িতে এসেছি।'

জানতে চাইলে ফোরকানের ছোট ভাই ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ফোরকান বিএনপির কোনো মিছিলে যাননি। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আজ সকালে তিনি তার কর্মস্থলে যান। পরে আমরা জানতে পারি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার হার্টের অসুখ ছিল।'

এই বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে হেলালুজ্জামান বলেন, সকালে ফোরকানের জামাইকে রাস্তা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এ কারণে পরিবারের লোকজন ভয় পেয়ে এসব বলছে। হয়তো তাদেরকে ভয় দেখানো হয়েছে।'

বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলের কিছু ভিডিও ক্লিপ ও ছবি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায় যে ফোরকান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি নেতারা জানান, ফোরকানের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে পাঠিয়ে দিয়ে শজিমেক হাসপাতাল থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে যান তার জামাই তুহিন। সেখান থেকে শ্বশুরবাড়ির দিকে যাওয়ার পথে তাকে আটক করা হয়। এর ঘণ্টা দুয়েক পর থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে জানতে র‍্যাব-১২, বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার (পুলিশ সুপার) মীর মনির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল তথ্য। এটাকে রাজনৈতিক ফ্লেভার দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা আজ কাউকে ধাওয়া দেইনি। আমার অফিসাররা সেখানে যাওয়ায় তারা (বিএনপি নেতাকর্মীরা) সম্ভবত সরে যায়। তারা দৌড় দেননি।'

'আমরা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি ফোরকান হার্টের রোগী ছিলেন। তিনি মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তার পরিবারের সদস্যরা এটাই বলছেন। আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করছি', যোগ করেন এসপি মীর মনির হোসেন।

তবে ফটকি ব্রিজ এলাকায় একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এখানে সকাল ৭টায় বিএনপির লোকজন বিক্ষোভমিছিল করে। র‍্যাব-পুলিশের বাহিনীর গাড়ি আসতে দেখে তারা মূল রাস্তা থেকে পশ্চিম পাশের একটি রাস্তা ধরে পালিয়ে যান। সেখানে বিএনপির একজনের অসুস্থ হওয়ার খবর আমরা জানতে পারি।

বিষয়টি নিয়ে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, 'আজকে বিএনপির মিছিলের সংস্পর্শেই যায়নি পুলিশ। তবে তুহিন নামের একজনকে আমরা কিছু সময়ের জন্য আটক করেছিলাম। সকালে সাজাপুর এলাকায় বাংলালিংক টাওয়ারের কাছে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল দাঁড়িয়েছিল। পুলিশের গাড়ি দেখা তারা পালিয়ে যাচ্ছিলেন। আমরা সেখান থেকে একজনকে আটক করি। পরে তিনি বলেন যে তার শ্বশুর হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। তখন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Netanyahu approves Lebanon ceasefire deal ‘in principle’: media

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu approved the emerging ceasefire deal with Hezbollah "in principle" during a security consultation with Israeli officials on Sunday night, a source familiar with the matter said

24m ago