‘আপনারা গানের মিছিলকেও ভয় পান?’

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে পুলিশ মিছিল আটকে দেওয়ার পর। ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

মিছিলকারীদের কণ্ঠে ছিল নজরুলের শেকল ভাঙার গান, কারাগারের লৌহ কপাট ভেঙে ফেলার প্রত্যয়। হাতে হাতে থাকা বর্ণিল প্ল্যাকার্ডগুলোতে ছিল ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে লেখা বিভিন্ন স্লোগান।

কিন্তু  মিছিল শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় তা আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় মিছিলকারীদের বলতে শোনা যায়, 'আপনারা গানের মিছিলকেও ভয় পান?'

আজ শুক্রবার ঢাকায় 'ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের দাবিতে' এই মিছিলের আয়োজন করে লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকদের একটি প্ল্যাটফর্ম।

মিছিল চলছে। ছবি: সারোয়ার হোসেন

বিকেল ৪টার পর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই মিছিলটি যাওয়ার কথা ছিল গুলিস্তানের শহীদ নূর হোসেন চত্ত্বর পর্যন্ত। তার আগেই রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে মিছিলকারীদের আটকে দেয় পুলিশ।

পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচি শেষ করেন আয়োজকরা। এ সময় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে আয়োজকদের বলতে শোনা যায়,  এভাবে শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেওয়াটা সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল। এভাবে মিছিল আটকে দেওয়ার কোনো অধিকার পুলিশের নেই।

এই মিছিলে ছিলেন লেখক-নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ। তিনি বলেন, 'কোনো ধরনের নৈতিক শক্তি কিংবা জনসমর্থন—এর কোনোটাই এই সরকারের নেই বলেই তারা এতটা ভয় পায়। আর এই যে পুলিশ ভায়েরা, বোনেরা আমাদের থামালেন, গানের মিছিল নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে দিলেন না, তাতে স্পষ্টই বোঝা যায় যে এরা সিন্ডিকেটের পুলিশ। এরা কোনোভাবেই জনগণের সুরক্ষা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বলতে যা বোঝায়, সেটার জন্য নিয়োজিত না।'

প্ল্যাকার্ড-স্লোগান। ছবি: সারোয়ার হোসেন

এর আগে মিছিলের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আজকের দেশ একটি কারাগারে পরিণত হয়েছে। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা চাল-ডালের স্বাধীনতা চাই, আমরা রাস্তায় নিরাপদে হাঁটার স্বাধীনতা চাই, আমরা বাড়িতে পৌঁছানোর স্বাধীনতা চাই। আমরা সংঘাত চাই না, আমরা শান্তি চাই।

মিছিলকারীদের হাতে হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা স্লোগানগুলো ছিল এ রকম- গণতন্ত্র মুক্তি পাক, ভোটাধিকার আমার মত প্রকাশেরই অধিকার, আমার কণ্ঠ আমার কলম স্তব্ধ করা যাবে না, কণ্ঠে মেলাও সুর দুঃশাসন হবে দূর, ইত্যাদি।

গত ১৩ অক্টোবর একই দাবিতে, একই প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে শাহবাগে একটি সাংস্কৃতিক সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ থেকে বক্তারা আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, 'গণতন্ত্রহীনতায়' বাংলাদেশে যে 'দুর্বিষহ' অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে আরেকটি 'ভোটারবিহীন নির্বাচন' হলে তা দেশকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।

ওই সমাবেশে ছিল প্রতিবাদী গান, পথনাটক, মূকাভিনয়, পারফরম্যান্স আর্ট, কবিতা পাঠ ও মুক্ত ক্যানভাসে প্রতিবাদী চিত্রকর্ম অঙ্কনের মতো বিভিন্ন আয়োজন।

    

Comments

The Daily Star  | English

Mirza Abbas accuses 'a party' of taking 'hadia' from Bashundhara, City Group, others

Mirza Abbas also BNP cannot be removed from public sentiment through "conspiracy"

2h ago