‘সরকারি কর্মচারীদের বেতন ৫ শতাংশ বাড়িয়েছি, আর গার্মেন্ট শ্রমিকদের বাড়ানো হয়েছে ৫৬ শতাংশ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে সরকারি কর্মচারীদের জন্য মাত্র ৫ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছি, আর গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।'
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খুলনা সার্কিটহাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
দেশে গার্মেন্ট শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের শ্রমিকরা, এই গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ৯৬ সালে সরকারে এসে দেখি, মজুরি ছিল মাত্র ৮০০ টাকা। আমি সেটা বাড়িয়েছিলাম ১ হাজার ৬০০ টাকায়। কিন্তু, বিএনপির খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে তো এক পয়সাও বাড়াইনি। না জিয়া, না এরশাদ, না খালেদা জিয়া—যেটুকু বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ।'
তিনি বলেন, 'প্রথমবার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০, দ্বিতীয়বার সরকারে এসে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বাড়ালাম। এরপর তৃতীয় দফায় ৮ হাজার ২০০ টাকায় বাড়ালাম। আর এবার চতুর্থ দফায় ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি করা হয়েছে। বেসরকারি খাত, তারপরও গার্মেন্টস মালিকদের বুঝিয়ে আমরা মজুরি বৃদ্ধি করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। হ্যাঁ, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কৃষক যা উৎপাদন করে, খুব অল্প টাকায় আমরা সার দেই, বীজ দেই, তাদেরকে সারের ভর্তুকি দিই। এই মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে সরকারি কর্মচারীদের জন্য মাত্র ৫ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছি, আর গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তাহলে তাদের আপত্তিটা কোথায়? ১৯টা শিল্প-কলকারখানা তারা ভেঙেছে।'
এই ধ্বংসযজ্ঞ কারা করছে সেই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এদের মধ্যে কারা আছে, সেটাই খুঁজে বের করার দরকার।'
বিএনপি-জামায়াতের সম্প্রতি কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, 'ওই সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়েত জোট—এরা তো মানুষের জন্য কাজ করে না। একজন তো এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজন ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে বলেছিল যে আর কোনোদিন রাজনীতিই করবে না। এখন লন্ডনে বসে বসে যত টাকা দুর্নীতি করে চুরি করেছিল, সেই টাকা খরচ করে, আর আগুন জ্বালিয়ে মানুষ মারে। এই মানুষ খুন, এটাই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র গুণ। আর কোনো গুণ তাদের নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ওপর হামলা করছে। মায়েরা তাদের বাচ্চাদেরকে নিয়ে হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল। ওই ইহুদিরা হাসপাতালের ওপর বোমা হামলা করে মা-শিশুকে হত্যা করেছে। বিএনপি-জামায়েতের লোকেরা বোধ হয় ওই ইসরায়েলিদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। যার জন্য আজ অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করে, অন্তঃসত্ত্বা মানুষকে পর্যন্ত পুড়িয়ে মারে। তাহলে এরা কারা?'
জনসভার আগে প্রধানমন্ত্রী খুলনায় ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিটহাউস মাঠে জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া, গত ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে খুলনা এসেছিলেন তিনি।
Comments