খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আজ শনিবার বিকেলে এক 'শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশনে' এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে শেখ হাসিনা কিছু কথা বলেছেন। এক কথায় তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন।'

'বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। যে টাকা তারা বলেন ২ কোটি ৩৩ লাখ, সেই টাকা এখন ৮ কোটির ওপরে চলে গেছে… ব্যাংকে জমা আছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, বেগম খালেদা জিয়া যাতে রাজনীতি করতে না পারেন, তাই তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে', বলেন তিনি।

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সংকটজনক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এই সরকার তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখে, চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।'

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা, ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এই সরকার একটা ভয়াবহ দানবের সরকার, লুটেরা সরকার, বর্গীদের মতো সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করে বাড়ি-ঘর বানাচ্ছে। আর আমার দেশে মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে।'

'তারা এরকম একটা ভয়াবহ রাষ্ট্র তৈরি করেছে। এটাকে রাষ্ট্র বলা যায় না, এ দেশ আওয়ামী লীগের নির্যাতনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এই রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে হবে, এর কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে এক দফার আন্দোলন করছি… গণতন্ত্রহরণকারী, মানুষ হত্যাকারী শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে।'

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'শ্রমিক শ্রেণিই অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি এবারও শ্রমিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।'

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে 'দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যুনতম মজুরি, শ্রম পরিস্থিতি ও সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে' এই কনভেনশন হয়। কনভেনশনে ২০টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এটি শ্রমিক-কর্মচারীদের দ্বিতীয় কনভেনশন। এর আগে, স্বৈরাচার এরশাদের পতনের আন্দোলনের সময় প্রথম কনভেনশন হয়েছিল।

শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশন আয়োজন কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় জেএসডির আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সভাপতি টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণ-অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয় শ্রমিক জোটের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ মো. আবু জাফর এবং সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এ এম ফয়েজ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এ ছাড়া, শ্রমিক ফেডারেশন, সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ, চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতি, শ্রমিক আন্দোলন, শ্রমিক কল্যাণ মজলিস, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা ও মিশুক চালক ইউনিয়ন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ, শ্রমজীবী পরিষদ, ভাসানী শ্রমিক পরিষদ প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago