জনমত উপেক্ষা করার পরিণতি ভালো হবে না: সিপিবি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, 'চলতি নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকারিতা হারিয়েছে। আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রধান দাবি।
এই মূহূর্তে এর কোনো বিকল্প নেই। কাজেই জনগণের দাবিকে মেনে নিয়ে সরকারের অবিলম্বে এ ব্যবস্থা নিতে হবে।'
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জনসভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, 'হামলা-মামলা দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না। এই মুহূর্তে দল নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে, ওই সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে। আমেরিকা, ভারতের কথায় নির্বাচন হবে, নাকি দেশের জনগণের কথায় নির্বাচন হবে?'
নেতারা 'সাম্রাজ্যবাদী, আধিপত্যবাদী অপশক্তিকে' রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'জনমত উপেক্ষা করার পরিণতি ভালো হবে না।'
পার্টির সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রমিকনেতা মাহবুব আলম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সাজেদুল হক রুবেল, হাফিজুল ইসলাম। এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম, শাহীন রহমান, অধাপক এ এন রাশেদাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সিপিবি নেতারা বলেন, 'বিনা ভোটে ঘোষিত এ অগণতান্ত্রিক সরকার বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শাসকগোষ্ঠী এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, এ সরকারসহ কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরেপক্ষ নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।'
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, 'যে নির্বাচন ব্যবস্থা, টাকার খেলা, পেশিশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজির খেলা সরকারগুলো বহাল রেখেছে তাতে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটার কোনো সুযোগ নেই। এ ভোটের নামে প্রহসন, গদি পরিবর্তনে জনগণের জীবনমানের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না।'
তিনি আরও বলেন, 'বর্তমানে ক্ষমতায় যারা আছে এবং যারা শুধু ক্ষমতায় যেতে চায় কেউই জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না। তারা বিদেশি শক্তির ওপর ভর করে মসনদে বসতে চায়।'
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই সরকার সাধারণ জনগণ, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। উপরন্তু একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিত বাজার সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দুর্নীতি-লুটপাট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।'
সমাবেশ থেকে জেলা-উপজেলায় জনসভা, সেপ্টেম্বরে ভোট ও ভাতের দাবিতে গণজাগরণ অভিযানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল করে সিপিবির শত শত নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ এ সমাবেশে যোগ দেন।
Comments