রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গি দমন নিয়ে বিজেপির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী

ছবি: বাসস

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে। দ্বিপাক্ষিক সফরের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'দেশটির প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে বলছেন, দুই দেশের সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় পার হচ্ছে। এটি দলীয় সফর। জেপি নাড্ডা (কেন্দ্রীয় বিজেপি সভাপতি) জানিয়েছেন তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে অতীতের মতো সামনেও একসঙ্গে কাজ করবে। আমরাও তাদের বলেছি, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা ভারতকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকি।'

বিজেপির আমন্ত্রণে ভারত সফর করে আসার পর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক এ কথা জানান।

গত ৬ থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটি। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সফরকারী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান ও দলীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তারা অর্থ দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছে। আর বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে।

আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বিজেপি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার পাশাপাশি বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলেও আশাবাদী তারা। তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি আরও জানান, সফরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গি দমন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায় বিজেপি। আওয়ামী লীগকে তারা গুরুত্ব দেয়। দুই রাজনৈতিক দল এক সঙ্গে কাজ করলে ভবিষ্যতে দুই দেশের আরও ভালো হবে বলে তারা মনে করেন।

তিনি বলেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অংশীদারিত্বমূলক কিন্তু ভারতের সাথে সম্পর্ক আত্মিক। তবে জামায়াত এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। বাংলাদেশে কী হচ্ছে ভারত তা জানে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচনে ভারতের কিছু করার নেই তবে তারা মনে করে, সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

ভারত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জঙ্গিবাদ দমনে ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারত।

সংবাদ সম্মেলনে ভারত সফরের বর্ণনা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জানান, ৭ আগস্ট সকালে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রেসিডেন্ট জগত প্রকাশ নাড্ডার সঙ্গে তার বাসভবনে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়ের মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জঙ্গিবাদ দমন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরও করা হয়।

এছাড়াও দুপুরে বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি বিনোদ তড়ের সঙ্গে বৈঠক হয়। বিকেলে ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয় শঙ্করের সঙ্গে তার দপ্তরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

৮ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টের লিডার অব দি আপার হাউজ (রাজ্য সভা) ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং ভারতে জি-২০ সম্মেলনের কো-অর্ডিনেটর ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর জি-২০ ফোরামে ভারতের কো-অর্ডিনেটর হর্ষবর্ধন শ্রীংলার সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে তিনি আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণের বিষয়টি উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখতে একযোগে কাজ করবে ভারত ও বাংলাদেশ। এ অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকায় সন্তুষ্ট তারা।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন স্থিতিশীল থাকে সেটি চায় ভারত। ১০ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছে বিএনপির আমলে। ওই আমলে তারা উদ্বিগ্ন ছিল বলে জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে সংখ্যালঘুরা ভালো আছে। উগ্রবাদীদের পাশের দেশকে ক্ষতি করতে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না বর্তমান সরকার- এই ঘোষণাতে সন্তুষ্ট ভারত।

সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, দলীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

5h ago