বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সিন্ডিকেট উৎসাহিত হবে: রিজভী

রিজভী
বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী | ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির বক্তব্যের জের ধরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তার বক্তব্যে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরও বেশি স্ফীতকায় ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে।

আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, 'বাণিজ্যমন্ত্রী "সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট তৈরি হবে" বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে সিন্ডিকেটে জড়িতরা আরও বেশি স্ফীতকায় ও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে। আরো বেশি প্রণোদিত ও উৎসাহিত হবে।'

'আসলে দেশবাসী সবাই জানে যে, সিন্ডিকেটের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই জড়িত, সে জন্যই বাণিজ্যমন্ত্রীকে সিন্ডিকেটের পক্ষে পক্ষাবলম্বন করতে হয়েছে,' বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, 'বাণিজ্যমন্ত্রী একজন বড় ব্যবসায়ী। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতারা জড়িত এটা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীই বলছেন, আমার নিজের কথা নয়। আমরা যে কথাটি বলে এসেছি ইতোপূর্বে এখন তাদের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে।'

তিনি বলেন, 'সারা বিশ্বে খাদ্য পণ্যের দাম কমলেও দেশে কেন লাগামহীন অবস্থা? কারণ যে দেশের অর্থনীতি, টাকা পাচার আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হরিলুটের নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত সেখানে খাদ্যপণ্যের লাগাম টানা যায় না। মেগা দুর্নীতির ভাবধারা থেকে উৎসারিত তথাকথিত মেগা উন্নয়ন করতে গিয়ে মানুষকে কিনতে হচ্ছে ছোট মুরগি, ছোট ডিম, ছোট সাবান, ছোট রুটি।'

মানুষ এখন মুরগির ডিমের বদলে কোয়েল পাখির ডিম কিনছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, 'চাল, চিনি, মাংস ও সবজির ওজন কমে যাচ্ছে। অর্থাৎ যে আয় দিয়ে তারা ১ কেজি বেগুন বা ১ কেজি আলু কিনতে পারত, এখন হয়তো হাফ কেজি কিনতে পারছে। গরিব মানুষের আয় থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য কিনতে পারছে না। সরকারের বাজেট পূর্বের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যক্তিগত বাজেট যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।'

ইউরোপসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় খাদ্য পণ্যের দাম কম উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'অথচ সরকার ইউক্রেন-রাশিয়ার দোহাই দিচ্ছে। আর ডিম, মাছ, মাংস তো আর ইউক্রেন থেকে আসে না! আসলে লুটপাটের সিন্ডিকেটের দুষ্টচক্রকে আড়াল করতেই যুদ্ধের অজুহাত দেওয়া হচ্ছে।'

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ। জাতীয় পাটি, গণফোরামসহ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ১০ জন সংসদ সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন।

এ সময় গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, '(মোকাব্বির খান) খুব ভালো কথা বলছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো উনি (মোকাব্বির) দায়িত্ব নিলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে ওনাকে দায়িত্বটা দিতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই আমার।'

তিনি আরও বলেন, 'চাইলে জেল-জরিমানাসহ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার- আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম; সেটা হয়তো করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে যে ক্রাইসিসটা তৈরি হবে সেটা সইতে তো আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে চেষ্টা করি।'

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

7h ago