‘বাণিজ্যমন্ত্রী যখনই বলেন জিনিসপত্রের দাম কমাবেন, পরদিনই বেড়ে যায়’

সংসদ
জাতীয় সংসদ ভবন। স্টার ফাইল ফটো

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে বলেছেন, 'বাণিজ্যমন্ত্রী যখনই বলেন যে জিনিসপত্রের দাম কমাবেন, পরদিনই বেড়ে যায়।'

পণ্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জড়িত কি না, এমন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অর্থ বিল, ২০২৩ এর সংশোধনী প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চুন্নু বলেন, 'বাজার একটু নিয়ন্ত্রণ করেন। উনি যখনই বলে জিনিসপত্রের দাম কমাবেন, পরদিনই বেড়ে যায়। উনি কি সিন্ডিকেটে জড়িত কি না বিষয়টা দেখেন। উনি যখনই বলেন কমাবেন, কন্ট্রোল করবেন তখনই দাম বেড়ে যায়। আসলে বাজারে নিয়ন্ত্রণ লাগবে, নিয়ন্ত্রণ নাই।'

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, 'সুইস ব্যাংক থেকে বাংলাদেশিদের ডলার সরিয়ে নেওয়া হলো। ওই টাকাগুলি কারা রেখেছলো। কোনো সংস্থা নাই, ইন্টারন্যাশনালি ভাড়া করতে পারেন না যে চোরগুলো কারা। কারা টাকা পাচার করে এ সব ব্যাংকে রাখছে। বের করেন না একটু।'

'এই যে ব্যাংকে এত পরিচালক দিলেন ১২ বছর থাকতে পারবে, এই যে ব্যাংকের লোকেরা পরিচালকরা যে লোন নেয় আবার দেখা যায় টাকা নিয়ে চলে যায়, এগুলো একটু নিয়ন্ত্রণ করেন,' বলেন তিনি। 

এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক করেটা কী? এই যে এত টাকা মার যায় এটা কি বাংলাদেশ ব্যাংক জানে না? এটা যে ব্যাড লোন এটা কি বাংলাদেশ ব্যাংক জানে না? হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে চলে যায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানে না? এগুলো শক্ত হাতে ধরেন, এত নরম হলে, চুপচাপ বসে থাকলে হবে না।'

তিনি বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে বলব, গ্রামের মানুষ খুব কষ্টে আছে জিনিসপত্রের দামের কারণে। এক মণ ধান বিক্রি করে ১ কেজি গরুর মাংস কেনে। ধান এক মণ ৯০০ টাকায় বিক্রি করে, গরুর মাংস ৮০০ টাকা। ১ মণ ধান বিক্রি করে ১ কেজি খাসির মাংস কিনতে পারে না, ১১০০ টাকা। ১ কেজি ইলিশ মাছ কিনতে লাগে ২ মণ ধান। কৃষকরা আসলে খুব কষ্টে আছে।'

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, 'সরকার বিশাল ঘাটতির বাজেট করেছে। এ বিশাল ঘাটতি মেটানোর জন্য সরকারকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে হবে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা চাপিয়ে দেবে, ওই টাকা ব্যাংক থেকে সরকারকে দেবে।'

এ কারণে দুটি জিনিস হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকার টাকা নিলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ পাবে না, কর্মসংস্থান হবে না। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে।'

ব্যাংক লুট হয়েছে উল্লেখ করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, 'শ্রীলঙ্কায় খেলাপি ঋণ ১১ শতাংশ, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ ৯ শতাংশ। এটা সরকারের হিসাব। আইএমএফের হিসাব ধরলে আমাদের খেলাপি ঋণ ৩ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বর্তমান বাজারের অর্ধেক। সরকারি হিসাবে অবলোপনসহ খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।'

'বেসরকারি ব্যাংকে স্বাধীন পরিচালক দেওয়া হয়। মালিকপক্ষ মামতো ভাইকে স্বাধীন পরিচালক করে তার মাধ্যমে ঋণ পাস করিয়েছে। যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সই করে দিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, 'ব্যাংক থেকে বিপুল ঋণ নেওয়ার জন্যই জনগণের ওপর অন্যায় করের বোঝা চাপানো হয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের উদীয়মান দেশের কর আর উন্নত বিশ্বের কর একই হতে পারে না।'

'দুর্নীতির অশুভ প্রতিযোগিতা বাংলাদেশে চলছে। এ সরকার ওয়াদা করেছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। দুর্নীতি এখন নীতিতে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এখন শূন্য। জিরো টলারেন্স হয়নি,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Retaliation 'underway' as India hits Pakistan

New Delhi claims hitting 9 'terrorist sites'; Islamabad says civilians hit, claims downing two Indian jets; at least three killed; US, UN sound alarm

1h ago