সরকারের সুর নিচে নেমে এসেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত

সরকারের সুর নিচের দিকে নেমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত ভিসানীতির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'বলে না যে "ম্যান প্রোপোজেস গড ডিসপোসেস" ভাবে এক হয় আরেক। কত লাফালাফি কয়েকদিন আগেও। এখন লাফালাফি কমে এসেছে। সুর নিচের দিকে নেমে এসেছে।'

'এখন কথা বলা হচ্ছে, সংঘাত তো চাই না, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই তো করতে হবে। আমরা তো বাঁধা দিচ্ছি না,' বলেন তিনি।

বিএনপির কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এই সেদিনও আমাদের সব জেলাগুলো কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সেদিনও আমাদের অনেকগুলো জেলায় সভা করতে দেওয়া হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ভাইয়ের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে নিপুণকে আহত করা হয়েছে।'

'কত চক্রান্ত। নরসিংদীতে আমাদের খায়রুল কবির খোকন ও শিরিন সুলতানার নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিজেরা ষড়যন্ত্র করে, হত্যা করে এখন আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। গায়েবি মামলা তাদের নতুন ক্রিয়েশন। কোনো কিছুই ঘটবে না একটা মামলা হয়ে গেল। সেই মামলায় ৪০ জনের নাম বাকি দেড় হাজার অজ্ঞাত। যখন যাকে খুশি ধরে নিয়ে আসো মামলা দিয়ে দাও,' বলেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

'এই লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা লড়াই করছি, আমরা সংগ্রাম করছি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে গত কয়েক বছর ধরে এই লড়াই করছি। এই লড়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে। আমরা পরিষ্কার করে দাবি জানিয়েছি। যে দাবি হচ্ছে প্রথমে তোমাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং এ দেশের মানুষ তোমাকে সামনে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এটা মনে করে না।'

তিনি বলেন, 'এই সংসদে তুমিই সংবিধান পরিবর্তন করেছ, সংবিধানে বিভিন্ন কাটাছেঁড়া করে এই সংসদ রেখেছ, সেই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে তাহলে সেই নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হতে পারে না। ২০১৪ সালে দেখেছি, ২০১৮ সালে দেখেছি…আর নতুন করে দেখার কিছু নেই।'

তিনি বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থাই আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমরা আবারও চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় তার ভোট নিজে দিয়ে নিজেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে।'

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, 'একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে ট্র্যাপে পড়ে যাওয়া, আমাদের ফাঁদে ফেলে দেওয়া, বিভিন্ন অপপ্রচার, অগ্নিসন্ত্রাস করে অভিযোগ দেবে আমাদের বিরুদ্ধে, অতীতে তারাই অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'হঠাৎ করে বলছে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে। এটা বিস্ময় ব্যাপার। আমেরিকা যখন যায় তখন বাড়িঘর সব বিক্রি করে যায়। আমাদের সাধারণ মানুষরা বিদেশে যায় যেমন সৌদি আরব যায়, কাতার যায়, কুয়েতে যায়। এরা সেখান থেকে রেমিট্যান্স পাঠায় অথবা নিয়ে আসে। এখন কী একটা জাদু তৈরি হলো যে, আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসছে। চোরেরা চুরি করে যত টাকা পাচার করেছে এখন তা আবার ফেরত আনছে। কারণ কী জানেন? আড়াই পারসেন্ট পাবে সেই কারণে।'

দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ।
 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

9h ago