‘আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে সারের দাম বাড়ানো কৃষক-জনস্বার্থবিরোধী’

সিপিবি

দফায় দফায় ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি, এমওপির দাম বৃদ্ধির পরও এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমা সত্ত্বেও সারের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ শনিবার ঢাকার পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, লাকী আক্তার।সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবিদ হোসেন।

সমাবেশে নেতারা বলেন, 'গত বছর আগস্ট মাসে ইউরিয়া সারের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বৃদ্ধির ধকল কৃষকরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কৃষক ফসল উৎপাদনে চরম লোকসান দিচ্ছে। এরইমধ্যে আবারও গত ১০ এপ্রিল সব প্রকার সারের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়ানো হলো। গত আগস্ট মাসে ইউরিয়া সারে বর্ধিত দামে বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫০ টাকা এবং এবার ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি, এমওপি সারে বর্ধিত দামে বিঘাপ্রতি প্রায় ৬০০ টাকা, কৃষককে মোট ৮৫০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হবে।'

তারা আরও বলেন, 'বিশ্বমন্দায় আমাদের দেশকে যারা বাঁচিয়ে রেখেছে তারমধ্যে অন্যতম কৃষক। বিভিন্ন উপকরণের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষিতে খরচ বাড়ছে। অথচ কৃষক তার ফসলের লাভজনক দাম পাচ্ছে না। সারের মূল্যবৃদ্ধি কৃষি ফসলের উৎপাদন খরচ বাড়াবে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এবার খরায় ধানসহ অনেক কৃষিপণ্য উৎপাদন সংকটে পড়েছে। এজন্য কৃষককে ক্ষতিপূরণ ও প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। চাল কেনার নামে মধ্যস্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।'

'গত ৮ মাস আগেই ইউরিয়া সারের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বৃদ্ধি করে কৃষকের নাভিশ্বাস বের করে দিয়েছিল সরকার। সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব প্রকার কৃষি উপকরণের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ফসলের লাভজনক দাম না পেয়ে কৃষক দিশাহারা। কৃষিবাজার সিন্ডিকেট গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি', যোগ করেন তারা।

সিপিবি নেতারা বলেন, 'এবার কেবল ইউরিয়াই নয়, সঙ্গে ডিএপি, টিএসপি, এমওপি সারের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউরিয়া ২৭, ডিএপি ২১, টিএসপি ২২, এমওপি ২০ টাকা কেজি কৃষককে কিনতে হবে। সরকারি সার কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও বছরের অধিকাংশ সময় কারখানাগুলোর উৎপাদন বন্ধ থাকে। সার কারখানার আধুনিকায়ন করে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে নিয়মিত সার উৎপাদন করতে হবে।'

সমাবেশে নেতারা আরও বলেন, 'আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে সরকারের গৃহীত এই সিদ্ধান্ত একটি কৃষক ও জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত। পৃথিবীতে করোনাকালে যে অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য আমাদের কৃষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সরকারের উচিত কৃষিখাতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রদান করে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটা না করে ব্যবসায়ী-মুনাফালোভী এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার বারবার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা আমাদের কৃষি খাতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'

সিপিবি নেতারা অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে ন্যায্য দামে সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

27m ago