সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে লেখার অধিকার খর্ব করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: স্টার

এই নির্বাচনকে ঘিরে সরকার আবারও তামাশা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ির পৌর মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, '১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে অর্জনগুলো করেছিলাম, যে স্বপ্ন নিয়ে, চিন্তা নিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম, তা পুরোপুরিভাবে তারা (আওয়ামী লীগ) হরণ করেছে এবং বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি কর্তৃত্ববাদী একনায়কতান্ত্রিক দেশে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিয়েছে। এখন আগামীতে নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো তারা আবারও তামাশা শুরু করেছে।'

'আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোনো তামাশার নির্বাচনে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি সত্যিকারের অর্থে জনগণ যেখানে ভোট দিতে পারবে, তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে, এ ধরনের একটা নির্বাচনে। আর সে নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে নয়। তারা যদি সরকারে থাকে, সে নির্বাচন কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না। সে কারণে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, শেখ হাসিনা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হননি। তাকে পদত্যাগ করতে হবে। তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে এই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। এটি আমাদের প্রধান দাবি', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা অর্থনৈতিক যে ভিত্তিগুলো, সেগুলোকে নড়বরে করে দিয়েছে। অথচ তারা বিভিন্ন রকমের কথা বলে, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এমন উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে এখানে ব্যাংক লোপাট হয়ে যাচ্ছে; বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো খেয়াল নেই।'

তিনি বলেন, 'আমরা যেটা বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারের এখন সময় হয়ে গেছে পুরোপুরিভাবে, তাদের চলে যাওয়া উচিত। আমাদের বাংলাদেশকে আবার আগে জায়গায় ফিরতে দেওয়া উচিত।'

'আপনারা দেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে সরকারি দলের আইনজীবীরা পুলিশের সহায়তায় নির্বাচনকে পুরোপুরিভাবে পণ্ড করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, পুলিশ সেখানে সম্পূর্ণ রীতি-বিরোধীভাবে সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে প্রবেশ করে বার লাইব্রেরিতে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।'

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, 'শুধু ঢাকাতেই নয়, অনেক স্থানে লক্ষ্য করা গেছে প্রাতিষ্ঠানিক যে একটা ব্যবস্থা, বার সমিতি সেটাকে দখল করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সকল শক্তি প্রয়োগ করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে তারা দ্বিধা করছে না। এখানে মানুষের একটা আস্থা ছিল, সেখান থেকে নির্মূল হওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। মানুষের অধিকার পুরোপুরি হরণ করা হয়েছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার, মানবাধিকার। এখানে সংবিধানকে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।'

'ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কিছু ব্যক্তিকে র‌্যাব তুলে নিয়ে গেছে, এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। আপনারা দেখেছেন নওগাঁয় একজন নারী কর্মচারীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর র‌্যাব কাস্টডিতে মারা গেছে। একইভাবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে করা মামলার মাধ্যমে মানুষের যে অধিকার তা খর্ব করা হচ্ছে। সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা যেটা সেটা হচ্ছে, সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে লেখার অধিকার, সেটা খর্ব করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP hopes for quick polls after minimum reforms

Meeting sources said some political parties, mainly the Islamist ones, emphasised the need to hold the local body election before the national election

3h ago